পরিবেশ দূষণ বর্তমানে এক অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। নানাভাবে আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণগুলির মধ্যে শব্দদূষণ একটি। বর্তমানে ঢাকা শহরের শব্দদূষণ যে পর্যায়ে অবস্থান করছে তা খুবই আশংকাজনক। সেটা সমস্যা মনে হলেও আমাদের অসচেতনতার কারণে আমরা প্রায়শ বলে থাকি এটার নিরসন সম্ভব নয়। কিন্তু এ সমস্যাগুলো মানুষেরই তৈরি। আমরা একটু সচেতনতা অবলম্বন করলেই এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মানুষের তৈরি এমন একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য পরিবেশগত সমস্যা হলো শব্দদূষণ। বাড়িতে, অফিসে, রাস্তাঘাটে এমনকি বিনোদনের সময়ও আমরা বিভিন্নভাবে শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি। বিশ্বব্যাপী মানুষ পরিবেশ দূষণ রোধে সোচ্চার। বাংলাদেশেও বর্তমানে পরিবেশ দূষণ রোধের বিষয়টি একটি আলোচিত বিষয়। অনেক ব্যক্তি বেসরকারি সংগঠন পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি তথা পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করছে। প্রচার মাধ্যমগুলোকে এ ব্যাপারে আরো এগিয়ে আসতে হবে। অতি সম্প্রতি পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা জনস্বার্থ তথা পরিবেশ উন্নয়নে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ। যা সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রচার মাধ্যমগুলো এগিয়ে এসে তা কার্যকর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সময়ে বায়ুদূষণ-পানিদূষণ রোধ এবং বনায়নের বিষয়গুলো আলোচিত হলেও শব্দদূষণ সম্পর্কে আলোচনা বা চিন্তাভাবনার গন্ডি একেবারেই সীমিত। শব্দদূষণের কারণেও মারাত্মক রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে সে সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সুস্পষ্ট ধারনা নেই। বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠন এ নিয়ে কিছু কাজ করলেও তা সমস্যার তুলনায় খুবই সামান্য। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের দেশে তেমন কোন আইন নেই, ট্রাফিক আইনও যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে না। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ, বায়ুদূষণ রোধ, পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার সীমিতকরণসহ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। শব্দদূষণের কিছু মৌলিক সমস্যা চিহ্নিত, সে সম্পর্কে জনসাধারণের মতামত গ্রহণ এবং তা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কিছু সুপারিশমালা এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে-যা জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারের নীতি নির্ধারণে সহায়ক বলে আমাদের বিশ্বাস। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কাজ করতে আগ্রহী, আশা করি তারাও এ প্রতিবেদন থেকে লাভবান হবেন। আমরা মনে করি জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ঐক্যবদ্ধ কর্ম প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত দিক নির্দেশনা শব্দদূষণকে নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে।