English | Bangla
‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায়: সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির দাবি’

তামাক ব্যবহারের প্রত্য ফল হিসেবে প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৭,০০০ জন মৃত্যুবরণ করছে এবং প্রতি বছর ১২,০০,০০০ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত প্রধান ৮টি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চিকিৎসা, অকালমৃত্যু, পঙ্গুত্বের কারণে বছরে দেশের অর্থনীতিতে ১১,০০০ কোটি টাকার তি হচ্ছে। তথাপিও বিগত কয়েক বছরের অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেলেও তামাকজাত দ্রব্যের দাম সে অনুসারে বৃদ্ধি পায়নি বরং কমেছে।  সস্তায় তামাকজাত দ্রব্য প্রাপ্তির কারণে মানুষের মধ্যে তামাক ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা যায়, গড়ে ১০% মূল্য বৃদ্ধিতে উচ্চ আয় ও নিম্ন আয়ের দেশসমূহে ধূমপায়ী এবং ধূমপানজনিত মৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়।

৭ মে ২০১১ সকাল ১০ টায় ময়মনসিংহ শহরের রেলস্টেশন চত্বরে সিরাক-বাংলাদেশ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, দিশা ও সমাউস আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪৩.৩% (৪১.৩ মিলিয়ন) প্রাপ্ত বয়স্ক লোক তামাক ব্যবহার করে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে রায় এবং নিরুৎসাহিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির মতো কার্যকর পদপে গ্রহণ করা জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা আরো জানান, প্রতিবছর তামাক কোম্পানিগুলো ভ্রান্ত প্রচারণা মাধ্যমে সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের বিভ্রান্ত করে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির বিরোধীতা করে। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের উপর কর বৃদ্ধি হলে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি হবে না কেন?

বক্তারা নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, মানুষের জীবন অপো কোন কিছুই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১১ এবং অনুচ্ছেদ ১৮ (১) সমূহের এ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হানিকর মদ ও ভেজষের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের কথা বলা হয়েছে। আন্তজার্তিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-র আর্টিকেল-৬ নং ধারায় তামাক ব্যবহার হ্রাসে কর বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। তাই অবস্থান কর্মসূচী থেকে সকল জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতি রায় সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি বিষয়ে বলিষ্ঠ পদপে গ্রহনের আহবান জানানো হয়।

অবস্থান কর্মসূচীতে বিশিষ্ট সাংবাদিক মোঃ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিরাক-বাংলাদেশ’র প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ অলি আহাদ, প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মোঃ বরকত ঊল্লাহ ভূঞা, দিশা-গৌরীপুর এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, সমাউস-তারাকান্দা এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন, উশিকা’র সভাপতি মোঃ আঃ কদ্দুছ, উন্নয়নকর্মী মোঃ তরিকুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মোঃ শফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম টিপু সহ জেলার বিভিন্ন সামাজিক এবং উন্নয়ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করেন।