জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘ঢাকা শহরে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত ১৬টি বাজার এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান আছে এবং নগরবাসীকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাবারের যোগান নিশ্চিত করে চলেছে। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের কার্যক্রমসমূহকে চলমান রাখতে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় একটি আরবান ফুড ডেস্ক তৈরি করা হয়েছে। এ ফুড ডেস্কের মাধ্যমে কৃষকের বাজারগুলোকে টেকসই করার উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক।
আজ ১২ অক্টোবর ২০২৩, বৃহষ্পতিবার, সকাল ১০.০০ টায়, রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে কৃষকের বাজার টেকসইকরণে কৌশল নিরূপণে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন। আয়োজনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের আইন বিভাগের যুগ্ম সচিব নুমেরী জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ-১ এর উপসচিব মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান এবং মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার। কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন, সাসটেইনেবেল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।
গাউস পিয়ারী বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য এবং বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষকের অবদান অনস্বীকার্য। এক্ষেত্রে কৃষকের বাজার একটি যথোপযোগী উদ্যোগ এবং উদ্যোগটি টেকসই করা হলে ভোক্তা ও কৃষক উভয়েই উপকৃত হবেন। ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড, প্যাকেটজাত পণ্যের উপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাওয়ায় দেশে বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসংক্রামক রোগের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ অবস্থা পরিবর্তনে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজারগুলোকে স্থায়ী করার লক্ষ্যে কি করণীয় এ বিষয়ে কৃষক, ক্রেতা, ও কাউন্সিলর কার্যালয়ের একটি সমন্বিত সুপারিশমালা প্রস্তাবনা আকারে প্রদান করা হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা সহজ হয়। কৃষকদের বাজার পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সিটি কর্পোরেশন বা স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি চিঠি প্রদান করা যেতে পারে। মূল্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের পণ্য উৎপাদনে ব্যয় অনুযায়ী লাভ নিশ্চিত করে দাম নির্ধারণ করা হলে ভোক্তারা উপকৃত হবেন।
নুমেরী জামান বলেন, কৃষকের বাজার পরিচালনার ক্ষেত্রে যে সকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা আমরা জানতে পেরেছি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের থেকে আরবান ফুড ডেস্কের জন্য অর্থ বরাদ্দের চেষ্টা আমরা করছি, যাতে বাজারগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা যায়। এ কার্যক্রমের সাথে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সম্পৃক্ততা অনস্বীকার্য, কারণ এছাড়া খাদ্যের মান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আজকে কাউন্সিলরবৃন্দের কাছ থেকে বাজার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা সুপারিশ পেয়েছি, যা আমাদের বাজারগুলো টেকসই করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণে সহায়তা করবে।
কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা কে এম ফরিদুল মিরাজ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড-১ এর কাউন্সিলর জনাব মাহবুবুল আলম, ওয়ার্ড-১৯ এর কাউন্সিলর জনাব আবুল বাশার, ওয়ার্ড-২৬ এর কাউন্সিলর মোঃ হাসিবুর রহমান, ওয়ার্ড-৩৯ এর কাউন্সিলর রোকন উদ্দিন আহমেদ, ওয়ার্ড-৫৫ এর কাউন্সিলর জনাব নুর-এ-আলম, ওয়ার্ড-১,১১,১২ এর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি, ওয়ার্ড-৫৫,৫৬,৫৭ এর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শেফালি আক্তার, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড নং-৩১,৩৩,৩৪ এর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর রোকসানা আলম, ওয়ার্ড নং-৬,৭,৮ এর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিখা চক্রবর্তী , গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড নং-২৮ এর কাউন্সিলর জনাব হাসান আজমল ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড নং-১৫ এর কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস। আরো বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন সুলতানা, নারায়ণগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা হাসনাত, রূপগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা, গাজীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম।