প্রতিবারের মতো এবছরও বইমেলা আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মেলা প্রাঙ্গন ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করায় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। তামাকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতি থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানীগুলো নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারনার মাধ্যমে আইন সংশোধনে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন কোম্পানীর প্রভাবমুক্ত রাখার. বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করে আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বিকেল ৪ টায় বইমেলা প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সংগঠনগুলোর উদ্যোগে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা হোক” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
উক্ত অবস্থান কর্মসূচি থেকে আহবান জানানো হয়, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বাস্তবায়নে তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নীতিসমূহ তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরি। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্যি তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার থাকার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন যাবত নানাভাবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক নীতি প্রণয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের তরুণদের অন্যতম প্রধান সমাগমের স্থান রেষ্টুরেন্টগুলোতে গড়ে তোলা হচ্ছে ধূমপানের স্থান। যেখানে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর সাইন/লোগো দেখা গেছে যা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। দেশের তরুণদের ধূমপানে উদ্ধুদ্ধ করার জন্য এটি তাদের একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূটকৌশল। এ অবস্থা থেকে উত্তোরনে জনস্বাস্থ্যহানীকর পণ্য উৎপাদনকারী তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার প্রত্যাহার করা জরুরী।
আয়োজকরা বলেন, বিশে^র কোন দেশে স্বাস্থ্যহানীকর তামাকজাত দ্রব্য এমন খোলামেলাভাবে বিক্রয় করা হয় না। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে বিক্রেতাদের জন্য লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হলে দেশের যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ হবে। এছাড়া বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধের পাশপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এছাড়া, সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচী (সিএসআর) এর আড়ালে বিভিন্ন কৌশলে তামাক কোম্পানিগুলো নিজেদের পণ্যের প্রচারণা চালাচ্ছে। বক্তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে কোম্পানীর মিথ্যা প্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে দ্রুত জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধন করার আহবান জানান।
কর্মসূচীতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, তাবিনাজ, বিএনটিটিপি, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, এইড ফাউন্ডেশন, বাঁচতে শিখ নারী, কসমস, নাটাব, টিসিআরসি, ডাস, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, আইডিএফ, কেএইচআরডিএস, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতি, দিশারী, আইপিএইচআরসি এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টসহ অন্যান্য সংস্থার এর কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।