ঢাকা নগরবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণে ‘এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার’ কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ষষ্ঠ কৃষকের বাজারটি স্থাপিত হলো হাজারীবাগ ঝাউচর এলাকায়। কেরানীগঞ্জের হজরতপুর থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক বাছাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী এ বাজারে তাদের উৎপাদিত নিরাপদ সবজি-ফল এ বাজারে সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করবেন। দেশব্যাপী কৃষকের বাজারের মতো কার্যক্রম বিস্তৃত করা হলে কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই উপকৃত হবেন।
আজ ১৮ নভেম্বর ২০২২ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৫ নং ওয়ার্ডে ঝাউচর প্রধান সড়ক, তিতাস গ্যাস অফিসের সামনের রাস্তায় কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন আয়োজনের প্রধান অতিথি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলহাজ্ব মোঃ নূরে আলম চৌধুরী। উদ্বোধনী আয়োজনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আয়োজনের বিশেষ অতিথি ৫৫,৫৬,৫৭ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শেফালী আক্তার, ৫৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ সরকার, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান, এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ঢাকা দক্ষিণের সিটি কো-অর্ডিনেটর শরীফা পারভীন, হাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি, ৫৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, জামাল বড়দা, সাধারণ সম্পাদক, কামরাঙ্গীরচর থানা ইউনিট ও সকল ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ এলাকাবাসী।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলহাজ্ব মোঃ নূরে আলম চৌধুরী বলেন, জনগণের স্বাস্থ্যগত কল্যাণ বিবেচনায় কৃষকের বাজারের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সহযোগিতা না করলে কৃষকগণ বিভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন এবং বাজারটি সফলভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে বাজারটি পরিচালনা ও তদারকির ক্ষেত্রে সকল ধরণের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণের ৫৫,৫৬,৫৭ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শেফালী আক্তার বলেন, ঢাকা দক্ষিণের ৫৫ এবং ৫৬ নং ওয়ার্ডের কৃষকের বাজারে শুধুমাত্র নিরাপদ সবজি-ফল পাওয়া যায়। এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে এটি একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ। বাজারটি তদারকির দায়িত্ব এলাকাবাসীরও। যে কোন ধরণের অব্যবস্থাপনা কাউন্সিলর কার্যালয়ে জানালে, তা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান বলেন, কৃষকের বাজার কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা কৃষক ও ভোক্তার মাঝে দূরত্ব হ্রাসের চেষ্টা করছি, গ্রাম এবং নগর এলাকার দূরত্ব হ্রাসের চেষ্টা করছি। কৃষকের বাজার একদিকে এলাকাবাসীকে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেবে, অন্যদিকে কৃষকের হাতে তার পণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিত হবে। আজকের উদ্বোধনী আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ৫৫ নং ওয়ার্ডে যাত্রা শুরু করলাম। কাউন্সিলর মহোদয়ের নের্তৃত্বে বাজারটি পরিচালিত ও টেকসই হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কৃষক বাঁচলে আমাদের দেশ বাঁচবে। কৃষকগণ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা স্বত্বেও পণ্যের সঠিক মূল্য এবং প্রাপ্য সম্মান থেকে তারা বঞ্চিত। কৃষকের বাজারের মতো উদ্যোগ সমগ্র ঢাকা শহর এবং দেশজুড়ে বিস্তৃত হলে কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই লাভবান হবে। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। যা পক্ষান্তরে কৃষকদের নিরাপদ চাষে আগ্রহী করে তুলবে।