ঢাকা শহরের ১,৫২৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্লান (ড্যাপ) চুড়ান্ত করেছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকাশ করা এক গ্যাজেট প্রজ্ঞাপনে এ রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য ড্যাপ কর্তৃক গৃহীত নীতিমালা ও পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন অন্যতম একটি সমাধান। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার জনসংখ্যার ঘনত্বকে নাগরিক সুবিধার সঙ্গে আনুপাতিক রেখে এবং আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পরিকল্পিত অবকাঠামো গড়ে তুলে আরও ৬০ লাখ মানুষকে বসবাসের সুবিধা দেয়া, পথচারীবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে আনা, গ্রীন নেটওয়ার্ক-ব্লু নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নগরবাসীর জন্য মাঠ-পার্ক তৈরি, সড়ককে গণপরিসরে পরিণত করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা এই পরিকল্পনায় দেয়া হয়েছে। আজ ১৫ অক্টোবর ২০২২, শনিবার, সকাল ১১.০০ টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কৈবর্ত কক্ষে ‘বাসযোগ্য ঢাকার জন্য নীতি ও পরিকল্পনা বিষয়ক পর্যালোচনা’য় বক্তারা দ্রুত ড্যাপ বাস্তবায়নের দাবি তুলে ধরেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাম উদ্দিন চিশতি, ড্যাপের ডেপুটি টিম লিডার খন্দকার নিয়াজ রহমান, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো: আশরাফুল ইসলাম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, আলি হোসেন বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি, সাইকেলার্স অফ বাংলাদেশ, সোসাইটি অফ দি ডেফ এন্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার (এসডিএসএল), ঢাকা পল্লীসেবা সংস্থা, সেন্ট্রাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশীপ (সিডিপি), টিম ইনক্লুশন বাংলাদেশ, একটিভ সোস্যাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ টুরিষ্ট সাইক্লিষ্ট, ওয়াল্ড কনসার্ন, প্রাস বাংলাদেশ, ইউথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, কার ফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রতিনিধীবৃন্দ।
হিসাম উদ্দিন চিশতি তার প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, ড্যাপে নাগরিক সকল ধরনের সুবিধাদি যেমন, ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খাল পুনরুদ্ধার, মাঠ-পার্কসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থান তৈরি ও পুনরুদ্ধার ভ‚মির ব্যবহার, যাতায়াত ব্যবস্থা, ঐতিহ্যবাহী স্থান রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে জোরারোপ করা হয়েছে।
খন্দকার নিয়াজ রহমান বলেন, একই এলাকায় ব্লক ভিত্তিক আবাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সেবা ও বিনোদন কেন্দ্রসহ সকল সুবিধাসমূহ পরিকল্পনা ড্যাপে রয়েছে। ফলে হাঁটা দূরত্বে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় পরিষেবা যেন মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করা সম্ভব। এতে নগরে হেঁটে যাতায়াতের ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে ও দূষণ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
মো: আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ভেতরে ৫৬৬ কিলোমিটার নদীসহ, পুকুরগুলোকে পুনদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসন ঢাকার আশপাশে বয়ে চলা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রস্থ সড়ক, প্রস্থ ফুটপাত নির্মাণ ও বৃক্ষরোপন বিষয়ে ড্যাপে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রস্তাবনাটিতে গণপরিবহন ব্যবস্থা সড়ক, নৌ ও রেলপথকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
গাউস পিয়ারী তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে আমদের নগরকে একটি বসবাসযোগ্য নগরে রুপান্তর করা অত্যন্ত প্রয়োজন। মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় নগরীরর মাঠ-পার্ক, জলাশয়, উন্মুক্ত স্থানসহ সকল সুবিধাদি দরকার। এমনকি কোভিড-১৯ এর সময় আমরা বুঝতে পেরেছি যে, বিভিন্ন ধরণের রোগ থেকে পরিত্রান পেতেও একটি নিরাপদ ও বসবাস যোগ্য নগরী কতটা জরুরী।