English | Bangla
বিশ্ব বসতি দিবস ২০২২ মাঠ-পার্কে খেলাধূলার অধিকার নিশ্চিতের দাবি কিশোরীদের
আমিও খেলতে চাই। মাঠে আমার খেলাধূলার অধিকার নিশ্চিত করুন- রায়েরবাজার এলাকার অর্ধ শতাধিক ছাত্রী রায়েরবাজার বৈশাখী খেলার মাঠে একটি সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে এই দাবি তুলে ধরেন। ঢাকা শহরে মাঠ-পার্কের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। এ সীমিত সংখ্যক মাঠ-পার্কে মেয়ে শিশু-কিশোরী বা নারীদের খেলাধূলার কোন সুযোগ নেই বললেই চলে। এর ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
১৯৮৬ সাল থেকে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়ে থাকে। ২০২২ সালে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- বৈষম্য হ্রাসে অঙ্গীকার করি, সবার জন্য টেকসই নগর গড়ি ( Mind the Gap. Leave No One and Place Behind)। আজ ৩ অক্টোবর ২০২২ বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষ্যে রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয়, সাকসেস মডেল হাই স্কুল, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত “পার্ক ও খেলার মাঠে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকলের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করুন” শীর্ষক সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে বক্তারা এ কথা বলেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তাহাজ্জোত হোসেন,  ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুলের শিক্ষক রিতা আকতার, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মকর্তাবৃন্দ।
 
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নগর এলাকায় নিয়মিত খেলাধূলা বা কায়িক পরিশ্রম করে মাত্র আড়াই শতাংশের বেশি কিশোর-কিশোরী। সুযোগের অভাব এবং সামাজিক বাধার কারণে এর মধ্যে কিশোরীদের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশন থেকে বিভিন্ন মাঠ-পার্ক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু নারী বা কিশোরীদের উপস্থিতি সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। প্রতিবন্ধী শিশুদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সঠিক বিকাশ নিশ্চিতে নগরের মাঠ-পার্কগুলোতে মেয়ে শিশু-কিশোরী-নারী-প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্যও খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি প্রয়োজন।

বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে এলাকাভিত্তিক যে পরিমাণ মাঠ, পার্ক ও উন্মুক্তস্থান রয়েছে তা একটি শহরের অনুপাতে খুবই কম। বেশির ভাগ স্কুলেই কোন খেলার মাঠ নেই। পর্যাপ্ত খেলাধূলার স্থান ও সুযোগ না থাকায় কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনে আসক্তি বাড়ছে। কৈশোর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে অনেকেই এককেন্দ্রিকতা, আত্মবিশ্বাহীনতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে। এছাড়া শারীরিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ২৬ শতাংশের বেশি শহুরে কিশোর-কিশোরীর ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি।
 
কর্মসূচি থেকে বক্তারা পার্ক ও খেলার মাঠে নারী-শিশু-প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকলের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা; মাঠ-পার্কে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নারীদের জন্য পৃথক কর্ণার তৈরি; মেয়ে শিশু ও কিশোরীদের মাঠে আসতে উৎসাহী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ; এলাকাভিত্তিক সামাজিকীকরণ ও খেলাধূলার সুযোগ গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।