বর্তমানে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। তবে সরকার শুধুমাত্র উৎপাদনে নয়, কিভাবে নিরাপদ ও পুষ্টিকর সবজি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়, সে বিষয়ে সচেষ্ট। এজন্য সবজি উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উত্তম কৃষি চর্চার দিকে জোরারোপ করছে। নিরাপদ ও পুষ্টিকর সবজি সহজে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং কৃষকদের তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাজীপুরের ৫৪ নং ওয়ার্ডে স্থাপিত হয়েছে কৃষকের বাজার। টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি এন্ড কলেজের সামনে স্থাপিত এ বাজারটি উদ্বোধন করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও ৫২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল আলীম মোল্লা।
আজ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করা হয়।
কৃষকের বাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও ৫২ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল আলীম মোল্লা এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। ওয়ার্ড নং ৫৪ এর কাউন্সিলর মো: নাসির উদ্দিন মোল্লার সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সচিব মোঃ হারুনুর রশীদ, গাজীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসিবুল হাসান এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ শহীদুল ইসলাম।
মোঃ আব্দুল আলীম মোল্লা বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি মাটি ও পানি দূষণ প্রতিহত করা সম্ভব। এ ধরণের উদ্যোগ ভোক্তা, কৃষক ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য উপকারি। বাজারটি টেকসই করার ক্ষেত্রে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। কৃষকগণ যেন এ বাজারে নিরাপদে সবজি বিক্রি করতে পারে সে বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।
মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লা বলেন, কৃষকের বাজারে কাউন্সিলর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এ জায়গাটিতে নির্মাণ সামগ্রী, আবর্জনা ফেলা হতো। আমরা এলাকাটি পুনরুদ্ধার করেছি। সড়কটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে কৃষকের বাজারটি পরিচালনার জন্য এলাকাবাসীর আচরণগত পরিবর্তন করা আবশ্যক।
মোঃ হারুনুর রশীদ বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কৃষকের বাজারে প্রাপ্ত নিরাপদ সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে এ ধরণের কৃষকের বাজার আরো স্থাপন করা প্রয়োজন।
মোঃ হাসিবুল হাসান বলেন, কৃষকের বাজারে আগত সকল কৃষক নিরাপদ চাষাবাদে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কিন্তু তারা পণ্যের সঠিক মূল্য পায় না। এ ধরণের উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকদের যথাযথ লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিরাপদ সবজি নিশ্চিতে কাজ করছে। এভাবে কৃষকের বাজার আয়োজনের মাধ্যমে কৃষক উপকৃত হবে এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হবেন।
গাউস পিয়ারী বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান নিশ্চিতে ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ২টি এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপিত হবে। ইতোমধ্যে ৪টি কৃষকের বাজার ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে স্থাপিত হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে এটি প্রথম কৃষকের বাজার। আমাদের প্রত্যাশা জনস্বাস্থ্য ও কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে কৃষকের বাজার ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান, সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, ফ্রেশ মার্কেট ট্রেইনার নুয়ারি তাবাসসুমসহ আরো অনেকে।