এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা নিশ্চিত করতে পল্লবীতে স্থাপিত হয়েছে কৃষকের বাজার। এ বাজারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করবেন। এ বাজারের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ সবজি-ফল সহজলভ্য হবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা অনুপস্থিত থাকবে বলে কৃষকরাও ন্যায্য মূল্য পাবেন। আজ থেকে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ বাজারটি আয়োজিত হবে। আজ ১৯ আগস্ট ২০২২ সকাল ১০.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সেলিনা বেগম, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের চীফ টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান, সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, ন্যাশনাল অপারেশন্স স্পেশালিস্ট সিলভি রাজ্জাক, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২ নং ওয়ার্ড সচিব সামাউল ইসলাম, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ফুড সিস্টেম এর ঢাকা উত্তর সিটি কো-অর্ডিনেটর মো নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ এবং পল্লবী এ ও সি ব্লকের এলাকাবাসী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কৃষকের বাজারটি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে বিরুলিয়া থেকে ১০ জন কৃষক তাদের উৎপাদিত নিরাপদ সবজি বিক্রি করবেন। কৃষকদের জন্য পানি, শৌচাগারসহ সকল সুবিধা নিশ্চিতের জন্য বাজারটি আমার কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি এখানে যেন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সেলিনা বেগম বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লক্ষ্য হলো মানুষকে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেয়া। এ কারণে কৃষকের বাজার কার্যক্রমের সাথে আমরা সম্পৃক্ত হয়েছি এবং নিরাপদ চাষী বাছাই এ ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টকে সহযোগিতা প্রদান করেছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এ ধরণের কার্যক্রম ও সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের চীফ টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান বলেন, কৃষকের বাজারে ভোক্তাগণ সরাসরি কৃষকদের থেকে নিরাপদ সবজি কিনতে পারবেন। নগরবাসীর পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিতে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট সম্মিলিতভাবে এ উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। মোট ১৬টি বাজার এ কার্যক্রমের আওতায় স্থাপিত হবে। আমরা আশা করি, কৃষকের বাজার নগরবাসীর পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিতে সহায়তা করবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষকের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে। ফলে কৃষকগণ তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ন্যাশনাল অপারেশন্স স্পেশালিস্ট সিলভি রাজ্জাক বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার লক্ষ্য হলো মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করা। কৃষকের বাজার কার্যক্রমটিও এর একটি অংশ। খাদ্যের সঠিক মান যেন নিশ্চিত হয়, ক্ষতিকর কেমিক্যাল যেন ব্যবহৃত না হয়, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক যেন মানবদেহের জন্য সহনীয় মাত্রায় ব্যবহৃত হয়, কাঁচাবাজারগুলো যেন মানসম্পন্ন হয় সে বিষয়ে ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্ট কাজ করছে।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কম মূল্যে অনিরাপদ খাদ্য ক্রয় করা হলে চিকিৎসায় অধিক অর্থ ব্যয় করতে হবে। এর থেকে একটু বেশি মূল্যে নিরাপদ খাদ্য ক্রয় করাই শ্রেয়। এলাকাবাসীর কাছে অনুরোধ আপনারা কৃষকদের সহযোগিতা করবেন। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এ ধরণের উদ্যোগ অত্যন্ত কার্যকরী।