সারাদেশে ব্যাপকহারে যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে তরুণদের তামাক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃহৎ দুটি তামাক কোম্পানি পক্ষ থেকে নিয়োজিত কর্মীদের নানা উপায়ে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন এবং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপ
ন নিষিদ্ধের বিধান রেখে সরকার ২০০৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করেছে। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অবমাননা করে তামাক কোম্পানিগুলো আগ্রাসীভাবে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত রেখেছে।
তারা আরও বলেন, তামাকপণ্য বিক্রয়স্থলে বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং আকর্ষণীয় পুরষ্কার ও নানা ধরনের অফার দেওয়ার মাধ্যমে তরুণদের তামাক সেবনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আজ তরুণদের মাধ্যমে পরিচালিত ক্যাম্পেইনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং আইন লঙ্ঘনের ফলে এর শাস্তির বিধান সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে। আমরা জানি, ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫, ৫ নং ধারা অনুসারে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ। কোন ব্যক্তি এই ধারা লঙ্ঘন করলে তিনি অনুধর্¦ তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড বা ঊভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুন: পুন: একই ধরনের অপরাধ করলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উল্লেখিত দন্ডের দ্বিগুণ হারে দন্ডনীয় হবে ।
তামাকের ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব এবং তামাক নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব অনুধাবন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩১ জানুয়ারি, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় বাস্তবায়ন করতে গেলে এ মুহূর্তে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সকল প্রকার তামাক ও তামাকজাত পন্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অগ্রাজ্য করে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পোস্টার, স্টিকারের মাধ্যমে তরুন সমাজসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে ধূমপানে আকৃষ্ট করার অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। এ বাস্তবতায় তাদের এই কূটকৌশলের বিরুদ্ধে গত ১৭ ই নভেম্বর এবং ২৪ শে নভেম্বর ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের একঝাঁক তরুন ও তামাক বিরোধী সহযোদ্ধা রায়ের বাজার এলাকার কাঁচাবাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকা এবং ধানমন্ডি শংকর ও তার আশেপাশের এলাকায় তামাকবিরোধী সচেতনতা মূলক কর্মসূচী পরিচালনা করে।
এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ডাব্লিউবিবি এর উদ্যেগে এবং বাটার সহযোগিতায় ১৭ ই নভেম্বর বুধবার বেলা ১০.৩০ থেকে ১২ টা পর্যন্ত রায়ের বাজার ও তার আশেপাশের এলাকার ১০ টি দোকানে একটি সচেতনতামূলক কর্মসূচী পরিচালিত হয়। উক্ত কর্মসুচী পরিচালনাকালে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যেও বিজ্ঞাপন ও প্রচারণাসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি দোকানের বিজ্ঞাপন অপসারণ করা হয় এবং পরবর্তীতে তারা যেন তামাক কোম্পানীর প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে নতুনভাবে কোন তামাক কোম্পানীর বিজ্ঞাপন ও প্রচারণাসংক্রান্ত লিফলেট না লাগায় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়। কর্মসূচী পরিচালনকালে দোকানের বিক্রেতাগণ বলেন, অনেকসময় চাকরী হারানোর কথা বলে, বিক্রেতাদের অজান্তে, জোর করে তামাক কোম্পানরী এজেন্টরা বিভিন্ন পোস্টার, স্টিকার, খালি প্যাকেটের ডিসপ্লে বক্স দোকানে প্রদর্শনের জন্য বিতরণ করে বা লাগিয়ে দেয়। তবে উক্ত কর্মসূচীতে বিক্রেতগণ দোকানে লাগানো পূবের্র বিজ্ঞাপণগুলো স্বত:স্ফূর্তভাবে ছিড়ে ফেলে এবং নষ্ট করে। কর্মসূচী পরিচালনের সময় তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘণে জরিমানার বিষয়েও তাদের সচেতন করা হয়। এসময় আশেপাশের অন্যান্য দোকানের ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারীগণও এ প্রচারণা কর্মসূচীকে স্বত:স্ফূর্তভাবে সমর্থন করে। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ক্যাম্পেইন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত এবং এ কর্মসূচীর মাধ্যমে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি । একজন সমাজকর্মী হিসেবে ধূমপানের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইনটিতে অংশ নিতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি । দলের প্রত্যেকটি সদস্যেও আন্তরিক প্রচেষ্টায় ক্যাম্পেইনটি সফল হয়েছে বলে আমি মনে করি ।