আমাদের দেশে নারীদের মাঝে এখনো ধূমপানের ব্যবহার কম। তবু ৩০% নারী কর্মস্থলে ও ২১% নারী পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গৃহেও নারীরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। নিজে ধূমপান না করলেও কর্মস্থলে পরো ধূমপানের কারণে নারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের পাবলিক প্লেস সংজ্ঞায় কর্মক্ষেত্র, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও রেষ্টুরেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে পরো ধূমপানের ক্ষতি হতে রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
২২ মে ২০১০ তারিখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসী ফোরাম এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত “নারীদের উপর তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসে করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে একথা বলা হয়। জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর সহ-সভাপতি অধ্যাপক লতিফা আকন্দ’র সভাপতিত্বে এতে আলোচনা করেন মানস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিশিষ্ট চিকিৎসাবিদ অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাসরিন মুক্তি, নারী নেত্রী তাজিয়া আজিম মজুমদার, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম এর সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম অফিসার বিধান চন্দ্র পাল এর পরিচালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সুজন।
অধ্যাপক ডাঃ অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, তামাকের কারণে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নারীসহ শিশুরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নারীরা শুধূমাত্র পরোক্ষ ধূমপানের কারণেই নয়, তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত করণসহ সকল কাজে নারীসহ শিশুদের সমৃক্ত করার কারণে তারা স্বাস্থ্যতিসহ বিভিন্ন তির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে নারীদের রায় প্রদপেক্ষ গ্রহণ প্রয়োজন। তবে এজন্য সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে যে আইন করেছেন তা বাস্তবায়নের পাশাপাশি সকলকে সচেতন হতে হবে।
নাসরিন মুক্তি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ফলে বেশ ইতিবাচক অনেক প্রভাব পড়েছে। যেমন পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান হ্রাস পেয়েছে, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন আর দেখা যায় না। বর্তমানে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন জোরদার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, টাস্কফোর্স সক্রিয়করণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম
নাছিমা আক্তার জলি বলেন, নারীদের তামাক ব্যবহারের সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে উঠে আসে না। তামাক পিছনে অর্থ ব্যয় করার করার নারী ও শিশুদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
অধ্যাপক লতিফা আকন্দ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করার পর দেশে প্রত্যক্ষ বিজ্ঞাপন বন্ধ হলেও দেশে এখন নাটক সিনেমাসহ বিভিন্নভাবে পরোক্ষ বিজ্ঞাপন প্রচলিত আছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। এছাড়া আমাদের দেশে নারীরা পরোক্ষ ধূমপানের সম্মুখিত হচ্ছে। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নারীদের রায় পদপে গ্রহণ করতে হবে।
এতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের পাবলিক প্লেস ও পরিবহনের সংজ্ঞায় কর্মত্রেক্ষ; বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও হোটেল; অযান্ত্রিক যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পৃক্ত, জর্দ্দা-গুল-সাদাপাতাসহ সকল তামাকজাত দ্র্রব্যকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি, তামাক বিরোধী সচেতনতা জোরদার করার বিষয়ে সুপারিশ করেন।