“বাংলাদেশের জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন জরুরি” থাই হেলথ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “সাসটেইনেবল ফান্ডিং ফর হেলথ প্রমোশন” শীর্ষক ঢাকায় ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ দু-দিনব্যাপী ভার্চুয়াল সম্মেলনের সমাপনী দিনে অংশগ্রহণকারীরা এ দাবী করেন।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন থাই হেলথ এর প্রতিষ্ঠাতা প্রাকিত ভাতিসাতোগকিত, সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টু, হেলথ ব্রিজ এর অঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়নে আামাদের ধারাবাহিক দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম পরিচালনা প্রয়োজন। আমরা আমাদের চিকিৎসা ব্যয় বাড়িয়ে স্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বরং আমাদের চিকিৎসা নির্ভর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। দুদিনের সম্মলেনে এটি প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যের মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। এ পার্থক্য আমাদের নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করেই পরিকল্পনা করতে হবে।
ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সম্মলিত ভাবে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার গুরুত্বপূর্ণ। তামাকের উপর নির্ধারিত সারচার্জ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য, যেমন- চিনিযুক্ত পানীয়, একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিক, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, চিপস এবং এ জাতীয় স্বাস্থ্যহানিকর মোড়কজাত খাদ্য, মোটর সাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কলকারখানা, যে সকল পণ্য ব্যবহারে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রয়োজন- এয়ার কন্ডিশন, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি এর উপর সারচার্জ আরোপের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশনের আর্থিক যোগান নিশ্চিত করা।
মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, আামাদের গবেষণায় আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এককভাবে জনগণের সুস্বাস্থ রক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের পরিবেশবান্ধব নগরায়ন, নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি-বায়ুর নিশ্চিয়তার প্রয়োজন । ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ করতে হবে। কারণ পরিবেশের সাথে স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি যুক্ত। স্বাস্থ্যখাতকে এখন বিস্তৃণভাবে ভাবতে হবে। সুস্বাস্থ্যের আন্তমন্ত্রনালয়ের সমন্বয় প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হেলথ প্রমোশন সফলতার সাথে কাজ করছে
দেবরা ইফরইমসন বলেন, নাগরিকের শুধু চিকিৎসা নিশ্চিত করাই নয়, সরকারের অন্যতম দায়িত্ব প্রতি নাগরিকের সুস্বাস্থ্য রাখা। সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি শারিরীক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো জড়িত। সুস্থ থাকার জন্য নির্মল পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানি, খাবার এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য কাজ করছে। তবে পৃথক একটি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন যারা চিকিৎসা সেবার বাইরে জনগণের সুস্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলোর জন্য সরকারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে। সেক্ষেত্রে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশনের কথা ভাবা যায়।
দুই দিন ব্যাপি সম্মেলনে ৩টি প্ল্যানারি, ৬টি প্যারালাল (সমান্তরাল), ১টি অংশগ্রহণমূলক এবং ১টি গণমাধ্যমের সাথে অধিবেশন আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪০০ এরও অধিক ব্যক্তি এ কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে বিভিন্ন সেক্টরের ৪৫ জন অতিথি আলোচক অনলািইনের মাধ্যমে উপস্থিত থেকে তাদের সুচিন্তিত বক্তব্য তুলে ধরেন।