সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক বিরোধী জোট ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে আসছে। এটি একটি মাইলফলক। এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উদযাপনের আঙ্গিকটা কিছুটটা ভিন্ন। জোটের সদস্য সংগঠনগুলো প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারী কর্মকর্তাদের যুক্ত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি সুরক্ষার আহবান জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। জাতীয় তামাকমুক্ত দিবসটি দেশে বেসরকারীভাবে পালন করা হচ্ছে, ৯ অক্টোবর দিনটিকে সরকারীভাবে ‘জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস’ ঘোষণার দাবী জানাই।
এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তামাক কোম্পানির প্রভাব বেড়ে গেছে। তামাক কোম্পানির কূট-কৌশল অনেকেই বুঝতে পারেন না। মূলত, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করে তাদের ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর/বিভাগেও তামাক কোম্পানির প্রভাব রয়েছে। সুতরাং, সরকারী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ অঙ্গীকার আমাদের জন্য বড় শক্তি এবং একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এই শক্তি কাজে লাগিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু বলেন, কৃষি মন্ত্রণালণের কমিটি কর্তৃক তামাকের মূল্য নির্ধারনসহ কৃষি বিপণন আইনে তামাককে অর্থকরী ফসল হিসেবে উল্লেখ রয়েছে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা। এটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে হবে। বিগত দিনেও আমরা তামাক কোম্পানি ও তাদের দোসরদের দ্বারা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি কিন্তু, শত বিপত্তির পরেও তামাক বিরোধীরা সাফল্যের দারপ্রান্তে। সুতরাং, এই সময়ে তামাক বিরোধী কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। গাছ-গাছালী, বন ধ্বংস করে তামাক প্রক্রিয়াজাত করা কোম্পানী আবার বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এমন কার্যক্রমকে ‘গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালার অভিনয়’ অভিহিত করেন তিনি।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন স্কোপ-বরিশাল এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল এ্যাকশন-ইপসা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প প্রধান নাসিম বানু শ্যামলী, আরডিএসএ-সুনামগঞ্জ এর নির্বাহী পরিচালক মিজানুল হক সরকার, প্রজন্ম-নওগাঁ এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহমান রিজভী, শেয়ার ফাউন্ডেশনের পরিচালক (প্রশাসন) দেবাশীষ দাস, ডাস বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক আমিরুল ইসলাম লিন্টু প্রমূখ। দেশের বিভিন্ন জেলা হতে অনলাইনে জোট’র বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় যোগ দেন।
জোট’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে তামাক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন দীর্ঘ দিনের। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতি ও মানুষের অকালমৃত্যু রোধে সরকারী-বেসরকারী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে সুদীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন তামাক বিরোধী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০১১ সাল থেকে জোট তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনটিকে বেসরকারীভাবে ‘জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে জোট। করোনা প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় এবছরও দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য জোট’র পক্ষ্য থেকে অনলাইনভিত্তিক কর্মসূচি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন পরিচালনা, স্মারকলিপি প্রদানসহ অন্যান্য কর্মসূচি চলমান রয়েছে।