English | Bangla
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কমিটির সক্রিয়তা জরুরী - ওয়েবিনারে বক্তারা

ধূমপায়ীদের করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি! এমন ক্রান্তিলগ্নেও থেমে নেই তামাক কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন, প্রচারনা, বিপণন কার্যক্রম। তামাক কোম্পানির এ ধরনের কার্যক্রমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তামাক বিরোধীরা। ২ মে ২০২০ শনিবার সকালে ‘স্থানীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে করনীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট সমন্বিতভাবে এ সভার আয়োজন করে।

বক্তারা বলেন, তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষয়-ক্ষতি রোধে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসকল পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক হলেও তামাক কোম্পানিগুলো ক্ষতিকর পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে আগ্রাসীভাবে আইন লঙ্ঘণ করেই চলেছে। তামাক কোম্পানির আইন লঙ্ঘণ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট তথ্য স্থানীয় প্রসাশন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন টাস্কফোর্স কমিটিগুলোতে তুলে ধরার পাশাপাশি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আরো বেগবান করতে হবে। এতে করে আইনের বাস্তবায়ন এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন গতিশীলতা পাবে।

সভায় অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র সমন্বয়কারী (যুগ্মসচিব) খায়রুল আলম সেখ। আলোচনা করেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমূখ। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সঞ্চালনায় প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান সভায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। 

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো অন্য সময়ের তুলনায় আরো আগ্রাসী রুপ ধারণ করছে। সুতরাং স্থানীয় পর্যায়ে জোটভুক্ত সংগঠনসহ জোটের বাইরে অন্যান্য সংগঠনগুলোকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এনটিসিসি’র সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও সহায়তা এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (যুগ্মসচিব) খায়রুল আলম সেখ বলেন, সারাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, কমিটির সভা আয়োজন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা ও সহায়তা, তামাক বিরোধী প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ জোরদার হয়েছে। এ কাজগুলো অব্যাহত রাখার পাাপাশি নাটক/সিনেমায় ধূমপান বন্ধে তথ্য মন্ত্রণালয়, চলচ্চিত্র পরিচালক/প্রযোজক সমিতি’র সাথে কাজ করছে এনটিসিসি। এক্ষেত্রে তামাক বিরোধী জোটের সদস্যদেরকে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রেখে মাঠ পর্যায় থেকে এনটিসিসিকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কমিটিগুলো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তামাক কোম্পানি কিভাবে আইন ভঙ্গ করছে তা অভিযোগ আকারে টাস্কফোর্স কমিটিতে তুলে ধরতে হবে। গণমাধ্যম, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড থেকে বিজ্ঞাপন সরাতে পারলে আমরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোকেও তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপনমুক্ত করতে পারবো।
 
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে সারাদেশ থেকে তামাক বিরোধী জোটভুক্ত ৪৮টি সংগঠনের প্রতিনিধিসহ তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের মুল্যবান পরামর্শ তুলে ধরেন-
সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইন লঙ্ঘণকারী কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা, টাস্কফোর্স কমিটির সভা নিয়মিতকরণ, করোনা পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক কোম্পানি খোলা রাখার সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।