তামাক কোম্পানিগুলো মানুষের হাতে ‘মৃত্যুশলাকা’ তুলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতি প্রণয়ন বিলম্বিতকরণ ও বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। জনস্বার্থে প্রণীত নীতি ও গৃহিত উদ্যোগ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এজন্য বিদ্যমান আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও সহায়ক নীতি প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের উদ্যোগে ২৬ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার রায়েরবাজারে ‘নীতিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’-শীর্ষক মতবিনিময় সভা এসব কথা বলেন বক্তারা। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা।
প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ-এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন-ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং-এর নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন, দি ইউনিয়নের কারিগরী পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, একাত্তর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মো. খালেদ শওকত আলী, সিনিয়র সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্র প্রমূখ। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনা করেন।
উপস্থিত ছিলেন ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাজমুল হায়দার, নাটাবের প্রকল্প সমন্বয়কারী একে এম খলিল উল্লাহ, সার্প এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবুল হোসাইন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মী সাগুফতা সুলতানা, ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, টিসিআরসি’র প্রকল্প কর্মকর্তা ফারহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের এ্যাডভোকেসী অফিসার আবু নাসের অনীক, শেয়ারবীজ পত্রিকার প্রতিবেদক মো. মাসুম বিল্লাহ, বার্তা 24 এর প্রতিবেদক নাজমুল হাসান সাগর, আমাদের সময়ের মো. মেহেরুল ইসলাম প্রমূখ।
এ ছাড়াও গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, বাংলাদেশ ইয়ুুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, লালু পঞ্চায়েত, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট, হিমু পরিবহনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো মানুষের হাতে ‘মৃত্যুশলাকা’ তুলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতি প্রণয়ন বিলম্বিতকরণ ও বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে সুবিধা আদায় করছে তামাক কোম্পানিগুলো। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই জনস্বাস্থ্য উপেক্ষিত থাকছে।
বক্তারা আরও বলেন, তামাক কোম্পানির এ ধরনের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি এফসিটিসি’র (ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল) সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এফসিটিসির প্রতিপালনে নৈতিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে চলা উচিত নয়। এতে করে তামাক কোম্পানি লাভবান হবে এবং চরম হুমকির মুখে পড়বে জনস্বাস্থ্য।
জনস্বার্থে নেওয়া গৃহীত উদ্যোগ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়-সেজন্য বিদ্যমান আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও সহায়ক নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলেও জানান বক্তারা।