English | Bangla
মিরপুরের ছয়টি পার্ক ও খেলার মাঠের ত্রিমাত্রিক নকশা প্রণয়ন করলেন স্থানীয়রা

একটি শহরে পার্ক ও খেলার মাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু ঢাকা শহরের প্রতিটি কমিউনিটিতে পার্ক ও খেলার মাঠ সুনিশ্চিত হয়নি। আবার যে সকল এলাকায় মাঠ-পার্ক রয়েছে তাও এলাকাবাসী যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারেন না। একটি মাঠ তখনই সকলের জন্য ব্যবহার উপযোগী হবে, যখন তাতে সকলের চাহিদার প্রতিফলন থাকবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, হেল্থব্রিজ-কানাডা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, ব্লক বাই ব্লক এবং ইউএনহ্যাবিটেট সম্মিলিত উদ্যোগে মিরপুরের পাঁচটি ওয়ার্ডের (২,৪,৫,৭ এবং ৯ নং) ৬ টি স্থানের  পার্ক ও খেলার মাঠগুলোকে সকলের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে তৈরির জন্য মাইনক্র্যাফ্ট খেলার মাধ্যমে এলাকাবাসী নকশা প্রণয়ন করেন। এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে সকলের জন্য ব্যবহার উপযোগী মাঠের নকশা তৈরির এ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ এলাকাবাসীই জানেন যে কিভাবে মাঠের যথাযথ উন্নয়ন, ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব। গত ০৬ জুলাই ২০১৯ ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কৈবর্ত সভাকক্ষে দুইদিন দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।  
 
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ ছয়টি ভাগে বিভক্ত হয়ে মাইনক্র্যাফ্ট খেলার মাধ্যমে ছয়টি ভিন্ন নকশা প্রণয়ন করেন। কর্মশালার শেষ দিনে সকল গ্রুপ তাদের নিজস্ব ত্রিমাত্রিক নকশা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত সকল উপাদানের মধ্য যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান চিহ্নিত করা হয় তা হল- শিশুদের পৃথক খেলার জায়গা, প্রশস্ত হাঁটার রাস্তা, সলিড ওয়ালের পরিবর্তে গ্রিলের ব্যবস্থা করা যাতে বাইরে থেকে ভিতরের কর্মকান্ড দেখা যায়, গণশৌচাগার, আলোর ব্যবস্থা করা, নিরাপত্তা কর্মী ইত্যাদির মাধ্যমে মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
 
সমাপনী অনুষ্ঠানে হেলথ ব্রিজ কানাডা এর আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন বলেন, ছোট একটি পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা খেলার মাঠ বা পার্ক সকলের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারি। যার উজ্জবল দৃষ্টান্ত বৈশাখী খেলার মাঠ। আগে মাঠটি নারীরা শুধু সকাল- সন্ধ্যা হাঁটার কাজে ব্যবহার করতেন। কিন্তু শিশু অঞ্চল তৈরি করার পর মাঠে নারী ও শিুশুদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা সকলের জন্য ব্যবহার উপযোগী গণপরিসর তৈরির চেষ্টা করছি। কিন্তু বাজেট স্বল্পতার কারণে আমরা করতে পারছি না। অন্যদিকে ব্যবস্থাপনায় বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছে। নগরে ছোট আকারে অনেক পরিত্যক্ত জায়গা রয়েছে সেগুলো সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করা গেলে গণপরিসরে চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে। ২ দিন ব্যাপি মিরপরের ৫ টি ওয়ার্ডের ৬টি খেলার মাঠ বা পার্কের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে এলাকাবাসীর অংশগ্রঞন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
 
ঢাক উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক তারেক বিন ইফসুফ বলেন, মাইনক্র্যাফ্ট গেমস এর মাধ্যমে খেলার মাঠ বা পার্ক উন্নয়নে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব। মাঠ ও পার্কের নকশা অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক হলে সকলের জন্য ব্যবহার উপযোগী হবে। এলাকাবাসী এবং এলাকার যারা নেতৃস্থানীয় আছেন তাদের এ মাঠের নকশা বাস্তবায়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউএনহ্যাবিটেট এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী এবং গণপরিসর বিশেষজ্ঞ সোহেল রানা, মাইনক্র্যাফট বিশেষজ্ঞ ইউহেনিও ইজাসটেলাম, মিরপুরের ৬ টি এলাকার শিশু-কিশোর, বয়োজ্যেষ্ঠ, পেশাজীবি, রাজনৈতিক কর্মী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সেফ দ্যা চিলড্রেন এর প্রতিনিধি এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। পরিশেষে কর্মশালয় অংশগ্রহণকারী সকলকে সনদপত্র প্রদান করা হয়।