![](/clock_uploads/images/Tobacco Tax_01 April 2019(1).jpg)
১ এপ্রিল ২০১৯ সকাল ১১ টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে “তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ" শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো.হাবিবুর রহমান খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো‘র ফোকাল পার্সন ড. রুমানা হক। অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, দি ইউনিয়নের কারিগরী পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি‘র প্রকল্প পরিচালক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট‘র পরিচালক গাউস পিয়ারী।
মূল প্রবন্ধে ড. রুমানা হক বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকজাত পণ্যের উপর কর বৃদ্ধি অত্যন্ত কার্যকর একটি পন্থা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সকল ধরনের তামাক পণ্যের ভিত্তিমূল্য বৃদ্ধি এবং সুনিদিষ্ট কর আরোপ করে জনগনের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
মো.হাবিবুর রহমান খান বলেন, তামাকের চাহিদা কমাতে অবশ্যই তামাকের উপর কর বাড়াতে হবে এবং সহায়ক আরো অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর উদ্যোগে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) ২০৪০ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ“ গড়ে তোলার সপ্ন বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ তৈরীতে কাজ করছে। সহায়ক আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়নের পাশাপাশি এক্ষেত্রে সকলের একান্ত সহযোগিতা আমরা প্রত্যাশা করছি।
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশের কর কাঠামো খুবই দূর্বল এবং পাশ্ববর্তী দেশের তুলনায় অনেক কম। তামাক কোম্পানীর জন্য ব্যবসা বান্ধব হওয়ায় পৃথিবীর সকল বড় বড় কোম্পানী এখন বাংলাদেশে তামাকের খাতে বিনিয়োগের জন্য আসছে। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে কর কাঠামো সহজ এবং কর বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের লক্ষ্য তামাকজাত দ্রব্যের উপর সুনিদিষ্ট কর বাড়িয়ে সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের উপর দাম বৃদ্ধি করা। তামাক কোম্পানীগুলো নানা অপ্রচারের মাধ্যমে তামাকের কর বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। প্রতিবছর বাজেটের আগে কোম্পানীগুলো তামাকের দাম বাড়লে চোরাচালান বাড়বে বলে ভয় দেখায়। চোরাচালানের এই অভিযোগটি সারা পৃথিবীব্যাপী তামাক কোম্পানী নিজেরাই তৈরি করে তামাকের কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে।
ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, চোরাচালান বাড়বে বলে তামাকের উপর কর বাড়ানো যাবে না যে অযুহাত কোম্পানী দেখায় তা আমাদের রাষ্ট্রের অবকাঠামোর জন্য লজ্জাজনক। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকের কর বাড়াতে হবে। যদি চোরাচালান বাড়ে তবে সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান মিলে তা প্রতিরোধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক হলেও তামাক কোম্পানী নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে তামাক নিয়ন্ত্রণকে বাধাগ্রস্থ করছে। বাজেটের আগে তামাক কোম্পানীগুলো তামাকের কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়া রুখতে নানা ধরনের কার্যক্রম করে থাকে। এবছরও তারা এধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। কোম্পানীর কার্যক্রমে বিভ্রান্ত না হয়ে জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধিও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বানিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, জেলা সিভিল সার্জন অফিস, জেলা পরিষদ, মানিকগঞ্জ, আইইডিসিআর, নিপসম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, জাইকা, অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, এইড ফাউন্ডেশন, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সিটিউিট এবং বাংলাদেশ ক্যান্সার ও তামাক বিরোধী জোট, তাবিনাজ, টিসিআরসি, সুপ্রসহ বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় ও সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।