বর্তমানে বাংলাদেশে মোট মুত্যুর ৬৭ শতাংশ হয় অসংক্রামক রোগের কারণে হয়। সভায় বক্তারা বলেন বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্যেও জোগান নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে সম্মনিত ভাবে বিদ্যমান আইন ও নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। ১১ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার, সকাল: ১০:৩০ টায় ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) সম্মেলন কক্ষে এনসিডিসি-স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট ও সিএনআরএস’র উদ্যোগে “অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যাক্ত করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল লাইন ডিরেক্টর ডা. নূর মোহাম্মদ। প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদে ‘র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক এ.এইচ.এম. এনায়েত হোসেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর কান্ট্রি এডভাইজার শফিকুল ইসলাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি) ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক । পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. খালেদা ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।
সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অব ইপিডেমিওলজি এন্ড রিসার্চ বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ও দ্যা ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম। সোহেল রেজা চৌধুরী তার প্রবন্ধে উপস্থাপন বলেন, আশংকাজনক ভাবে অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ৬৭ভাগ মৃত্যু অসংক্রামক রোগের কারণে হচ্ছে। সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রবন্ধে উপস্থাপনায় বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও মান রক্ষার সাথে সরকারের ৮ টি মন্ত্রণালয় এবং ২৫ টি আইন রয়েছে। এ সকল আইনের মাধ্যমে খাদ্যের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মান রক্ষা, বাজারজাতকরণ নিশ্চিত, মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে এ লক্ষ্যে প্রয়োজন সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরগুলোর সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।
ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালেক বলেন, বাঁচার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। কিন্তু অস্বাস্থকর খাবার জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। জাতীয় উন্নয়নের ধারাতে অব্যাহত রাখতে অবশ্যই জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জনস্বাস্থ রক্ষায় নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চয়তার পাশাপাশি জীবনধারা পরিবর্তন করে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে। শিশুদের এই স্বাস্থকর খাবার সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতে সরকারী ও বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠানকে এক সাথে কাজ করতে হবে। ডা. নুর মোহাম্মদ বলেন, সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত, বাজারজাতকরণ, খাদ্য গ্রহন সকল প্রক্রিয়াই স্বাস্থ্যকর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পারিবারিক ভাবে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড় তুলতে হবে।
আবু নাসের খান বলেন, আামাদের খাদ্য নিরাপত্তার ও জনস্বাস্থ্যরক্ষায় অবশ্যই পরিবেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। বিশুদ্ধ খাদ্যের জোগান নিশ্চয়তাই দূষণমুক্ত পরিবেশ ছাড়া সম্ভব নয়। ড. খালেদা ইসলাম বলেন, শুধু বাইরেই নয় আমাদের ঘরে স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস করতে হবে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের আইন প্রণয়নের সাথে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, সুস্বাস্থ্য রক্ষায় লবন, চিনি, চর্বি এই তিনের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জনসচেতনতা পাশাপাশি আমাদের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে পর্যান্ত আইনের দরকার, প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ। ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক বলেন, ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড ও কোমল পানীয়সহ অনন্যা অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলোতে অধিক হারে ট্যাক্স বাড়াতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন পাবলিক হেলথ ফাউডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. মোজাহেরুল হক, হাবিবুল্লাহ তালুকদার সহকারী অধ্যাপক জাতীয় ক্যান্সার গবেষনা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, গণমাধ্যম কর্মী কর্মসুশান্ত সিনহা, আইআরডি বাংলাদেশ এর চাইল্ড টিবি কন্ট্রোল এর টিম লিডার সাগুফতা সুলতানা, তাবিনাজের সমন্বয়কারী সাইদা আক্তার প্রমূখ।