জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়ক মানিকমিয়া এভিনিউ মাসে অন্ততঃ একটি দিন গাড়িমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার সকালে ‘ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এই ঘোষণা দেন। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উপলক্ষে সড়কে যান্ত্রিক যানবাহন বন্ধ করে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত মানিক মিয়া এভিনিউস্থ সড়কে (সংসদ ভবনের সামনে) নানান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। কর্মসূচীর মধ্যে ছিলো আলোচনা, সাইকেল শোভাযাত্রা, ঘুড়ি উড়ানো, বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমে জাতীয় সংগীত ও পরে বেলুন উড়িয়ে ওই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা সড়ক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এম, এ, এন, ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী, পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় মন্ত্রী মাসের প্রথম শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেন, “ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস আমরা কাগজে লিখলাম, সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দিলাম, কিন্তু বাস্তবে কিছু না করা গেলে এসব কথা বলে লাভ নেই। আমাদের কারমুক্ত দিবসের যথার্থতা উপলব্ধি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমরা যে লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছি তা ২০৩০ সালের মধ্যে যদি পূরণ করতে চাই, তাহলে অবশ্যই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কাজেই এখনই যদি আমরা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করি তাহলে শুধু সড়কের প্রসার ঘটিয়ে কোন সুবিধা পাওয়া যবে না।
অনুষ্ঠানে দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ভালো না হওয়ায় যানজট আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। পবিরবহন পরিকল্পনায় যাতায়াত ব্যয় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা আরো বলেন, ঢাকা শহরকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমাদের পরিকল্পনা শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক। কিছু উন্নয়ন অন্যান্য শহরেও করা উচিত, যা বিকেন্দ্রিকরনে ভূমিকা রাখবে। প্রত্যেক এলাকায় মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করা। এতে করে যাতায়াত চাহিদা কমে যাবে। পাশাপাশি যানজটও কমে যাবে। ব্যক্তিগত গাড়ী নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থাকে গণমূখী করার দাবি জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ২০০৬ সাল থেকে দিবসটি পালন শুরু হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে বেসরকারী উদ্যোগে পালিত হলেও এবার দ্বিতীয়বারের মত ঢাকা সড়ক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগসহ সরকারি ও বেসরকারী ৪৯টি সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস (ডড়ৎষফ ঈধৎ ঋৎবব উধু) পালিত হয়েছে। আগামীতে রাষ্ট্রীয় ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওই অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।