জাতিসংঘ ঘোষিত মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে নির্মল বিনোদন অন্যতম। নির্মল বিনোদনের জন্য পার্ক, উদ্যান ও উন্মূক্ত জনসমাগমস্থলের গুরুত্ব অপরিসীম। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে পার্ক ও খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ভূমিকা অতুলনীয়। বর্তমান নগর ব্যবস্থায় নগরবাসীর জন্য যথেষ্ট ব্যবহার উপযোগী পার্ক ও খেলার মাঠ নেই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য এ সুযোগ আরো অপ্রতুল। আমাদের দেশের বর্তমানে প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। তাদের জন্য নগরীতে বিনোদন এবং শরীরচর্চার সুযোগ নেই বললেই চলে। সকলের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) প্রণয়ন করা হয়েছে। এসডিজি’র লক্ষ্য ১১.৭ নং লক্ষ্যমাত্রায় ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য সার্বজনীন নিরাপদ ব্যবহার, সকল স্থানে প্রবেশযোগ্য সবুজ উন্মুক্ত স্থান বিশেষ করে নারী, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের সংলগ্ন এলাকায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি বিশেষ খেলার মাঠ তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ মহান উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে ১৮ জানুয়ারী ২০১৭ বুধবার, সকাল ১১টায় হিউম্যান রাইটস ডিজ্যাবেলীটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সুর ও সঙ্গীত চক্র, ডিজএবেল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, সোসাইটি ফর দ্যা ওয়েলফেয়ার ওফ অটিষ্টিক চিল্ড্রেন এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট মিরপুর সড়কের পার্শ্বে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে (আড়ং এর বিপরীতে) “প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পৃথক খেলার মাঠ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রদান” শীর্ষক কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্যে গাউস পিয়ারী, পরিচালক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে পার্ক, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব কোন অবকাঠামো নেই। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা আশা করি।
রাজিব শেখ, সভাপতি, হিউম্যান রাইটস ডিজ্যাবেলীটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, বলেন, এসডিজি’র লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করতে হলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে তাদের অংশগ্রহণের প্রতি গুরুত্বরোপ করতে হবে। সে লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভৌত অবকাঠামো, যোগাযোগ এবং সর্বপরি বিনোদনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
মর্জিনা আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক, ডিজএবেল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যানের জন্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩ পাশ করেছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সুযোগ পেলে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বর্তমান সরকারের গৃহীত উদ্যোগসমূহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যথাযথ উন্নয়নে সহায়ক।
কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবীর; অনিমেষ বিশ্বাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সোসাইটি ফর দ্যা ওয়েলফেয়ার অফ অটিষ্টিক চিল্ড্রেন; মীর আজিজুল হক,সদস্য, সুর ও সঙ্গীত চক্র এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর নাঈমা আক্তার, তানজিদা হক প্রমুখ।