English | Bangla
নারী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পার্ক ও খেলার মাঠ ব্যবহার উপযোগী করতে হবে
নারী, শিশু, ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ঢাকার পার্ক ও খেলার মাঠগগুলোতে ইচ্ছে থাকা সত্বেও গণপরিসরগুলোতে প্রবেশগম্যতার অভাবে যেতে পারে না। প্রবেশগম্যতার অভাবে ঢাকার গণপরিসরগুলোতে নারী শিশুর উপস্থিতি খুবই কম এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপস্থিতি একেবারেই নেই। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট কর্তৃক “অন্তর্ভূক্তিকরণ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে: গনপরিসরে নারী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশ” গবেষণায় নারী,শিশু ও প্রতিবন্ধীব্যক্তিদের ঢাকার গণপরিসরে ব্যবহারে প্রবেশগম্যতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা উঠে এসেছে। আজ  ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সভাকক্ষে “গণপরিসরে নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা” শীর্ষক আলোচনা সভায় গবেষনার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। 
 
গবেষণাটি মূলত চার শ্রেণির প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উপর পরিচালনা করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের অপ্রতিবন্ধী নারীকেও অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়েছে। বেসরকারি  উন্নয়ন সংস্থা ও সমাজ কর্মী, এবং প্রতিবন্ধীব্যাক্তিদের নিয়ে কাজ করে ব্যক্তিদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। আলোচনা সভায় গণপরিসর প্রবেশগম্য করার মধ্য দিয়েই একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ গঠন দাবী করা হয়। 
 
সভায় সভাপতিত্ব করেন গাউস পিয়ারি, পরিচালক প্রশাসন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্ট, প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেবরা ইফরইমসন, আঞ্চলিক পরিচালক, হেল্থ ব্রিজ কানাডা, এবং সঞ্চালনা করেন নাজনীন কবীর, উপ-প্রকল্প পরিচালক ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্ট। বিশেষ অথিতি হিসেবে ছিলেন জুলিয়া আহম্মেদ, নির্বাহী পরিচালক নোভা কনসালটেন্সি বাংলা, সাবিনা হোসেন, অধ্যক্ষ, সোসাইটি ওয়েলফেয়ার ফর অটিষ্টিক চিলড্রেন (সোয়াক), এডভোকেট মোশাররফ হোসেন মজুমদার, আফরোজা নাজনীন সিনিয়র সাংবাদিক, নাজরানা ইয়াসমীন হিরা, প্রকল্প সমন্বয়ক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, রুকসানা সুলতানা নির্বাহী পরিচালক, ব্রেকিং দা সাইলেন্স, সালমা মাহ্বুব সাধারণ সম্পাদক, প্রতিবন্ধী নাগরিক সংগঠনের পরিষদ। 
 
দেবরা ইফরইমসন বলেন, খেলার মাঠ এবং পার্ক গণপরিসরগুলোতে পুরুষ এবং বালকদের চলাচল সবচেয়ে বেশি। মহিলাদের মধ্যে যাদের বয়স ২৫ এর বেশি তাদের যাতায়াত গণপরিসরগুলোতে থাকলেও তারা শুধুমাত্র হাঁটা ও বসা ছাড়া কোন প্রকার খেলায় নিজেদেরকে যুক্ত রাখেন না। তাদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যক নারী দলীয় ব্যায়ামে অংশগ্রহণ করলেও পুরুষের তুলনায় তাদের সংখ্যা খুবই নগন্য এবং তাদের কেউ ৪০ বছর বয়সের নিচে না। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপস্থিতি একেবারেই নেই। আর এ বিষয়গুলো সমাজের জন্য বাঁধা। আমরা অর্ন্তভক্তিমূলক সমাজ দেখতে চাই। 
 
এ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন মজুমদার: প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা ৩৪ এর (২) উপধারা (১) এ উল্লেখ আছে ‘যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সর্বসাধারণ গমন করে এইরূপ বিদ্যমান সকল গণস্থাপনা, এই আইন কার্যকর হইবার পর, যথাশীঘ্র ও যতদূর সম্ভব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আরোহন, চলাচল ও ব্যবহার উপযোগী করিতে হইবে।’ কিন্তু রাজধানীর মাঠ, পার্কগুলোতে আমাদের প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।
 
জুলিয়া আহম্মেদ বলেন প্রবেশগম্যতা, চাকুরী, এবং বিনোদন এ তিনটি বিষয়কেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। যেমন তাদের চাকুরীর প্রয়োজন রয়েছে তেমনিভাবে বিনোদন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করে। সকলের কথা চিন্তা করে যদি পার্কের নকশা না করা হয় তাহলে পার্ক এর ব্যবহার কমে যাবে।
 
সালমা মাহবুব বলেন যে, গণপরিসরগুলোকে প্রবেশগম্য করার পরিবর্তে আমরা এর সৌন্দর্যবর্ধনের দিকে বেশি নজর দিই। আমাদের দেশে প্রবেশগম্যতা নিয়ে তেমন সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। তাই তিনি এই নীতিমালাগুলোকে যুগোপযোগী করার আহ্বান জানাই।