তামাক বিরোধীদের দাবীর প্রেক্ষিতে ‘ব্যাটল অব মাইন্ড’ কর্মসূচির আড়ালে তামাকের প্রচারণা কর্মসূচি বন্ধ
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন অমান্য করে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে অভিনব প্রচারণা কার্যক্রম (Battle of Mind) পরিচালনা করছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। তরুনদেরকে চাকুরী প্রদানের নামে পরিচালিত তথাকথিত এ কার্যক্রমের আড়ালে তামাকের আগ্রাসী প্রচারণা এবং সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মের হাতে সিগারেট নামক মৃত্যু শলাকা তুলে দিচ্ছে বিএটিবি।
সরকার যেখানে বাংলাদেশকে ‘তামাকমুক্ত দেশ’ হিসেবে বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছে সেখানে ধূর্ত তামাক কোম্পানি বিএটি’বি নতুন নতুন ধূমপায়ী তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর এজন্য তারা বেছে নিয়েছে আগামীর সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের। অবিলম্বে এধরনের কার্যক্রম বন্ধের দাবী জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ
২৫ অক্টোবর বুয়েটে বিএটিবি’র Battle of Mind কর্মসূচী বন্ধের দাবীতে অবস্থান নেয় তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহ। তামাক বিরোধী সংগঠনসমুহের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে বুয়েটের মত একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ধূর্ত তামাক কোম্পানির এধরনের কার্যক্রম বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদানের প্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ‘ব্যাটল অব মাইন্ড’ এর আড়ালে তামাকের প্রচারণা কর্মসূচী বন্ধ ঘোষনা করেন।
উল্লেখ্য নিজেদের পণ্যের ব্রান্ড প্রমোশন, তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে আকৃষ্ট করা এবং নীতিপ্রণেতাদের প্রভাবিত করতেই বিএটিবি প্রতিবছর এই মৃত্যুবিপণন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত এগারো (২০০৪-২০১৪) বছরে বিএটিবি কর্মসংস্থানের নামে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ১৫ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে মাত্র ৭১ জনকে চাকুরি দিয়েছে। অথচ রোডশো, ভ্রমণ, বিনোদন, মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রচারণামূলক কাজে এসময়ে ব্যয় করেছে কোটি কোটি টাকা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমেও তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, একদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত “সাউথ এশিয়ান স্পীকার সামিট” এ আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। অপরদিকে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) এর ৫ (গ) ধারায় তামাক কোম্পানির নাম, সাইন, ট্রেডমার্ক, প্রতীক ব্যবহার করে এ ধরনের কোন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন ও পুরস্কার প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি আইনের এই ধারা লংঘন করলে অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান বলবৎ আছে।
প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট’র ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর সহ-সমন্বয়কারী সাঈদা আক্তার, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার, সিটিএফকে’র কর্মকর্তা রিয়াসাত রাজি, একলাব’র প্রকল্প সমন্বয়কারী আব্দুল কাদের, টিসিআরসির প্রকল্প কর্মকর্তা ফারহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা কাজী মো. হাসিবুল হক, ঢাকা আহসানিয়া মিশন এর প্রোগ্রাম অফিসার উম্মে জান্নাত কনি, প্রজ্ঞার ইন্ডাষ্ট্রি মনিটরিং অফিসার মেহেদী হাসান প্রমূখ।