নারী অধিকার বিষয়টি মানবাধিকার থেকে ভিন্ন কিছু নয়। নারী অধিকারের ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সব বিষয়গুলোই প্রযোজ্য। অধিকন্তুআরো কিছু অধিকার আছে যা একান্ত নারীকে তার নিজস্ব মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বাঁচতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন সামাজিক মূল্যবোধ এবং মানসিকতার পরিবর্তন। এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে না পারলে একটি দেশের উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীই নারী। অর্ধেক জনগোষ্ঠীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কেউই উন্নতি সাধন করতে পারবে না। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে একসাথে কাজ করতে হবে। নারীর অধিকার আমরা যখন অনুভব করতে পারবো, তখনই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ৮ ফেব্র“য়ারী ২০১৬ সকাল ১০.০০ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কৈবর্ত সভাকক্ষে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত আগামি ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী সচেতনতা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে মাসব্যাপি কর্মসূচীর মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনা বৃদ্ধিতে ক্যাম্পেইন, লিফলেট বিতরণ এবং সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের সমাজে নারীরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নীরবে অবদান রাখছে। কিন্তু তার কোন স্বীকৃতি নেই। ঘরে ও বাইরে নারীদের সবসময় কাজের মধ্যে থাকতে হয়। তথাপি নারীর এই কাজগুলোকে অর্থনীতিতে এক প্রকার অবদান হিসেবে দেখছি। গৃহস্থালি কাজে নারীদের সহযোগিতায় পুরুষদের এগিয়ে আসা উচিত। নারী নির্যাতন কমিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গৃহস্থালী কাজের নারীর অবদান স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্র্ন ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে প্রিপ ট্রাষ্টের নির্বাহী পরিচালক এ্যারোমা দত্ত বলেন, নারীদের সমস্যাগুলো খুঁেজ তা সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে। শিক্ষা সমাজের নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মূল হাতিয়ার। শিক্ষাই পারে নারীদের সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে। তিনি বলেন অতীতের চেয়ে নারীরা অনেক দূর এগিয়েছে। আর মানুষের মানসিকতার পরিবর্তনের ফলে তা সম্ভব হয়েছে। রোকেয়া সাখাওয়াত যে বিদ্যালয়ে পড়তে পারেননি, আজ সে বিদ্যালয় হাজারো নারী শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের ডেপুটি কর্মসূচি ব্যবস্থাপক নাজনীন কবির বলেন, গৃহস্থালী কাজে নারীদের ব্যাপক অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে এখনো গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থনীতিতে নারীর অবদান সম্পর্কে সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে আরো বৃহত্তর পরিসরে গবেষনা হওয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট এমন প্রয়োজন মনে হলে এ উদ্যোগ সাার্থক ও সফল হবে। আমরা বিভিন্ন সংগঠন যখন জেন্ডার বিষয়ক কাজ করি, প্রশিক্ষন প্রদান করি তখন বিছিন্নভাবে গৃহস্থালী কাজের গুরুত্বের বিষয়টি চলে আসে, নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটি সত্যিই গুরুত্ব¡পূর্ণ বিষয়।
তানজিলা চৌধুরী বলেন, নারীর গৃহস্থালী কাজ বাধাগ্রস্ত হলে দেশের অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হবে। সাম্যের সমাজ গড়তে নারীর গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন করতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের ডেপুটি কর্মসূচি ব্যবস্থাপক নাজনীন কবির- এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান। ডেমোক্রেসি ওয়াচ-এর প্রকল্প কর্মকর্তা আল্লামা দিদার, অনুষ্ঠান পরিচালক নাহিদ পারভীন, সাবনাজ আক্তার প্রমুখ।