সারাবিশ্বে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে এর উপর কর বৃদ্ধি একটি অন্যতম উপায়। আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি), এর আর্টিকেল ৬-এ তামাকের মূল্য বৃদ্ধি ও কর বৃদ্ধির নির্দেশনা রয়েছে। কারণ, এতে সরকারের কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় না। উপরন্তু, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বাড়ালে একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি অন্যদিকে তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যুহার কমে আসবে। যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের ব্যয় কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। উপরোক্ত বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং উচ্চহারে করারোপের দাবী জানিয়ে ০৬ মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’র উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি অবস্থান কর্মসূচী আয়োজন হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প কর্মকর্তা তৌহিদ-উদ-দৌলা রেজা, তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর সদস্য রোকেয়া বেগম, নবনিতা মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আতিকা আহসান, বাঁচতে শিখো নারী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফিরোজা বেগম প্রমূখ।
হেলাল আহমেদ বলেন, দু:খজনক হলেও সত্য পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশেই সবচাইতে কম মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। সাদাপাতা, জর্দা, গুল, বিড়ি ও সিগারেট সহজলভ্য হওয়ায় বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের মধ্যে তামাক সেবন ও এর ফলে মানুষের রোগব্যাধির হার বেড়ে চলেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতে। তামাকজনিত মৃত্যুর হাত থেকে জনগণকে রক্ষা এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের খাতিরেই সর্বগ্রাসি তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বৃদ্ধির উদ্যোগ জরুরি।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, তামাকের কারণে অসুস্থ্যদের মাত্র ২৫% রোগীর সরকারি স্বাস্থ্যসেবা, অকালমৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের কারণে বছরে সরকারের যে অর্থ ব্যয় হয়, তা তামাকজাত দ্রব্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের দ্বিগুণ। মানুষের জীবন অপেক্ষা কোন কিছুই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। তাই উন্নত বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যহানিকর তামাকজাত পণ্যের উপর কর বাড়ানো প্রয়োজন।
রোকেয়া বেগম বলেন, যে কোন পণ্যের দাম বাড়লে ভোক্তাদের মধ্যে এর প্রভাব পড়ে। তামাকের প্রকৃত মূল্য বাড়লে তামাক ব্যবহার কমে এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত। তাই এ বিষয়ে আমাদের দেশেও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
কর্মসূচিতে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), বস্তি উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।