সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানিতে সরকার ও বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের শেয়ার রয়েছে ১১.৪৫ শতাংশ। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো পণ্যের ব্যবসায় সরকারের অংশীদারিত্ব থাকার বিষয়টি দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তবে আশার কথা, সরকার ইতোমধ্যেই ৩০% থেকে তার শেয়ার ১১.৪৫% এ নামিয়ে এনেছে যা প্রশংসনীয় কিন্তু, সরকারের উন্নয়ন নীতিকে চলমান রাখতে হলে প্রাণঘাতি তামাকজাত পণ্য ব্যবসায়ী ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি থেকে বাকি শেয়ার প্রত্যাহার করা উচিৎ বলে মনে করে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।
৩০ অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি হতে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারের দাবীতে” আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে উপরোক্ত দাবী জানান তামাক বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- মাদক ও নেশা বিরোধী কাউন্সিল এর উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মিলন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অতিরিক্ত রেজিষ্টার ড. মো. শাহ আলম চৌধুরী, গ্রীণমাইন্ড সোসাইটি’র সভাপতি আমির হাসান, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডি.এম সাকলায়েন, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প কর্মকর্তা রেজা আহমেদ প্রমূখ। কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান।
রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা সরকারের কাছে আহব্বান জানাতে চাই, বিএটি’র মত ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি হতে বাকি ১১.৪৫% শেয়ার প্রত্যাহার করুন। তামাক বিরোধী জোট মনে করে বিএটি থেকে এই ১১.৪৫% সামান্য শেয়ার প্রত্যাহার করে নিলে বহির্বিশ্বে সরকারের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে।
হেলাল আহমেদ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচির আড়ালে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণ করে আসছে। বিএটিবি তে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বলবৎ আছে বিধায় কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘণে আরো উৎসাহী হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন এবং সংশোধন, সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের উপর ১% সারচার্জ আরোপের মত বিএটিবি থেকে শেয়ার প্রত্যাহার করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, একদিকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টা, অন্যদিকে তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার এবং নিরুৎসাহিত পণ্য থেকে লভ্যাংশ গ্রহণ সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে জনগনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এতে তামাক নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত বা বিলম্বিত হতে পারে। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এবং নৈতিকতার স্বার্থে এ অবস্থান থেকে সরকারের সরে আসা প্রয়োজন।
আমির হাসান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে আর্ন্তজাতিক চুক্তি (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে এধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা জরুরী।
কর্মসূচিতে প্রদেশ, স্বপ্নের সিঁড়ি, ভিলেজ পিপলস্ অর্গানাইজেশন, বাঁচতে শিখ নারী, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতিসহ অন্যান্য তামাক বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।