তামাক কোম্পানীগুলো নানাভাবে প্রলুব্ধকরণ প্রচেষ্টা থেকে সরকারী কর্মকর্তাদের সর্তক থাকতে হবে। আজ ২ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১০.৩০টায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যলয়ের সহযোগিতায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও দ্যা ইউনিয়নের আয়োজনে “তামাক নিয়ন্ত্রণে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন ও স্থায়িত্বশীল অর্থনৈতিক যোগান নিশ্চিতে করনীয়” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমেদ, মো: আবুল বাসার তালুকদার পুলিশ সুপার ডিআইজি ঢাকা, মো: সাইফুল্লাহ রাসেল জেলা কমান্ডডেন্ট বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি ঢাকা, এম কাজী এমদাদুল ইসলাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা, ডা:নাজিব আহমেদ উপ পরিচালক স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয় ঢাকা বিভাগ, জাকির হোসেন খান ডেপুটি সিভিল সার্জন ঢাকা, অতিরিক্ত উপ পরিচালক মো: আবুল কালাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মো: তারিকউজ্জামান জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা ঢাকা, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ মোহাম্মদ মাহবুব সোবাহান জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, এ কে এম আজিজুল হক উপ পরিচালক জেলা তথ্য অফিস ঢাকা উপস্থিত ছিলেন। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।
হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, আর্টিকেল ৫.৩ তে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে তামাক কো¤পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। জনস্বার্থ রক্ষায় ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে আর্টিকেল ৫.৩ বিষেয় প্রচারণা করতে হবে। তামাক কোম্পানীগুলো নানাভাবে প্রলুব্ধ করা প্রচেষ্টা করলে সরকারী কর্মকর্তাদের সর্তক থাকতে হবে। আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে ঢাকা সকল জেলা প্রশাসকদের চিঠি প্রদান করা হবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ ও অর্জনগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মীদের আশাবাদী করে তোলে। কিন্তু কোম্পানীগুলো সরকারী কর্মকর্তাদের নানাভাবে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত। কোম্পানীর এই অপপ্রচেষ্টাকে রুখতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্টিকেল ৫.৩ সর্ম্পকে অবহিত হতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শুধু তামাক নিয়ন্ত্রণ নয়, পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বৈদেশিক অনুদান কিংবা ঋণের উপর নির্ভর না হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্থায়িত্বশীল অর্থনৈতিক যোগান নিশ্চিত করতে হবে। তাই তামাকসহ ক্ষতিকর ও অস্বাস্থ্যকর পণ্য যেমন কোমল পানীয়, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুডের উপর অধিকহারে কর আরোপ করে অর্জিত অর্থ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যয় করতে হবে।
মো: আবুল বাসার তালুকদার বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এটি আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংস করছে। এক্ষেত্রে আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তামাক কোম্পানীগুলো রাষ্ট্রকে কি পরিমাণ ট্যাক্স প্রদান করছে তা হিসাব না করে তামাক গ্রহনের ফলে পরিবেশ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন ।
এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, তামাক কো¤পানির হস্তপে স¤পর্কে জনগণ এবং সরকারী কর্মকর্তাদেরর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জনস্বার্থ রক্ষায় এবং রাষ্ট্রের আইন বাস্তবায়নে সরকারী কর্মকর্তারা অব্যশই দায়িত্বশীল আচরণ পালন করা উচিত।
মো: সাইফুল্লাহ রাসেল বলেন, বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। তামাকের ক্ষতিকর বিষয়ে সচেতন হয়ে ২০১১ সালেই বাংলাদেশ আনাসর ভিডিপি’র সকল স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান ধূমপান ম্ক্তু করা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণে আটিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নে আনাসার ভিডিপি আন্তরিক ও ইতিবাচক ।
শেখ মোহাম্মদ মাহবুব সোবাহান বলেন, দেশে তামাক ব্যবহারে মৃত্যুর হার বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় ৯৫ হাজার লোক তামাকজনিত কারণে মৃত্যু বরণ করছে। ২০০৯ সালের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশে ৪৩.৩ ভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক লোক তামাক ব্যবহার করে। কোম্পানীগুলো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইন ভঙ্গ করে নানা কৌশলে মেয়েদের ধূমাপানে উদ্বুদ্ধ করছে। দেশে নারী ধূমপায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে।
সেমিনারে ঢাকা জেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করে।