২৮ জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২টায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর আয়োজনে বার কাউন্সিল সভাকক্ষে “তামাক নিয়ন্ত্রণে এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার দেশের সকল বার কাউন্সিল ধূমপান মুক্ত ঘোষনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ক্ষতিকর এ পন্য উৎপাদনে তামাক কোম্পানির প্রতি কোনরূপ সুবিধাজনক বা পক্ষপাতমূলক আচরণ করা যাবে না।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর হিউম্যান রাইটস কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান এডভোকেট জেড আই খান এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সাবেক আইন মন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু-এমপি, বার কাউন্সিলের সদস্য এবং ফিনান্স কমিটির সন্মানিত চেয়ারম্যান এডভোকেট স.ম রেজাউল করিম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা সৈয়দা অনন্যা রহমান।
জেড আই খান বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫, সংশোধন ও বিধিমালা প্রণয়ন সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। জনস্বার্থে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তামাক কোম্পানীগুলো বিভিন্ন কুটকৌশলে নীতি নির্ধারক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদেরও প্রভাবিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ড্রাফ্ট প্রণয়ণ এবং দেশের তামাক বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ন ভ’মিকা ছিল। জনস্বার্থে আমাদের এই ভ’মিকা ধরে রাখতে হবে।
আবদুল মতিন খসরু বলেন, জনস্বার্থে তামাক উৎপাদন নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি নাটক, সিনেমা এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে তামাকের কুফল সচেতন করতে হবে। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরী। তামাক কোম্পানীগুলোর কর বৃদ্ধি সম্পর্কে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, তামাক থেকে প্রাপ্ত কর দিয়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব নয়। নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে অর্থের চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে।
মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন বলেন, দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণে বহুদূর অগ্রসর হয়েছে। মানুষ তামাক ব্যবহারে আগে থেকে অনেক সচেতন হয়েছে। এই সাফল্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন ছাড়া তামাক কোম্পানির সাথে সবরকম আলোচনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
রেজাউল করিম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। এ ক্ষেত্রে সমাজের সকল শ্রেনী-পেশার মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তামাকজাত পন্যের প্রসারে কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পৃষ্ঠপোষকতা আড়ালে নানাধরনের অন্যান্য কর্মসূচী গ্রহণ করে এগুলো বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ তে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসি স্বাক্ষর, র্যাটিফাই ও এ চুক্তির বিভিন্ন ধারা অনুসারে আইন সংশোধন করলেও এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তামাক নিয়ন্ত্রণে এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদাণ অত্যন্ত জরুরী।
এছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এডভোকেট মানবেন্দ্র রায়, এডভোকেট সাইফুল হক, এডভোকেট রুশো, এডভোকেট সাকিব, এডভোকেট মোসাব্বির তুহিন, এডভোকেট বেলায়েত হোসেন মাসুম, এডভোকেট শ্যামল কান্তি সরকার, এডভোকেট আইরীন সুলতানা প্রমূখ।