English | Bangla
তামাক কোম্পানীর প্রভাব প্রতিহত করতে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন জরুরী
তামাক নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক গৃহিত আন্তর্জাতিক চুক্তি (Framework Convention on Tobacco Control (FCTC) । এই চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এর বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করেন তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠনগুলো। আজ বিকেল ৪:০০ টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, একলাব, এইড ফাউন্ডেশন, মানবিক, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র সম্মিলিত আয়োজনে রায়ের বাজারে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নিজস্ব কনফারেন্স রুমে “তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক কোম্পানীর প্রভাব প্রতিহত করতে এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
 
প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন’র সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ এর সভাপত্বিতে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রশাসনিক পরিচালক গাউস পিয়ারী। আরো বক্তব্য রাখেন- এইড ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বকুল, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, একলাব’র নির্বাহী পরিচালক তরিকুল ইসলাম প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলাম।
 
মূল প্রবন্ধে ফাহমিদা ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী সব ধরনের তামাকের ব্যবহার সীমিত ও নীতি প্রনয়ণের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা এফসিটিসি এর অন্যতম মূল লক্ষ্য। এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রসমুহকে এর নির্দেশনা অনুসারে তামাক কোম্পানী ও তাদের সাথে সম্পৃক্তদের সাথে আলোচনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা আর্টিক্যাল ৫.৩ তে উল্লেখ করা হয়েছে। তামাক কোম্পানীগুলোর প্রতারণামূলক কার্যক্রম বন্ধে এই চুক্তি অত্যন্ত কার্যকর।
 
আমিনুল ইসলাম বকুল বলেন, এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের পথে তামাক কোম্পানীগুলো বিঘœ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে তামাক কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পৃষ্ঠপোষকতার আড়ালে যেসব কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে এতে করে ক্ষতিকর তামাকজাত পন্যেও বাজার প্রসারিত হচ্ছে। সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ব্যবস্থার প্রবর্তন করা জরুরী। 
 
ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, বিশ্বের কিছু দেশ এফসিটিসি ৫.৩ স্বাক্ষর করার পাশাপাশি এর বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফিলিপাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি আর্টিকেল ৫.৩ কমিটি গঠন করা হয়েছে। থাইল্যান্ড বহুজাতিক তামাক কো¤পানির হস্তক্ষেপের কৌশল চিহ্নিতকরণ এবং তা প্রতিহত করছে। অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যয় আমাদের দেশেও এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
 
গাউস পিয়ারী বলেন, তামাক কোম্পানীগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা ধরনের কর্মসূচী গ্রহণসহ বিভিন্ন উপায়ে আমাদের তরুণদের তামাকজাত দ্রব্য সেবনে উদ্ধুদ্ধ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। তরুনদের রক্ষার্থে তামাক কোম্পানীগুলোর অপকৌশল প্রতিহত করতে হবে।
 
হেলাল আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের রক্ষাকবচ এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩। এফসিটিসি এর গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিক্যালটির বাস্তবায়নে জোরালোভাবে কাজ করা প্রয়োজন। সরকারীভাবে এটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। 
 
তরিকুল ইসলাম বলেন, তামাক কোম্পানীর অপকৌশল ও অপচেষ্টাকে প্রতিহত ও নিয়ন্ত্রণ করতে জনসচেতনতা ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সাথে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো প্রয়োজন। বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকার উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বহুজাতিক তামাক কোম্পানীগুলোর প্রতারণামূলক কার্যক্রমের ফলে আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছি। দেশের সার্বিক উন্নয়ন তরান্বিত করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে।
 
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- মানবিক, বাদশা, টিসিআরসি, অরুণোদয়ের তরূণ দল, মাধবিকা, প্রদেশ, স্যোসাল শেল্টার, ও সারাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সদস্য সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিগণ।