তামাক কোম্পানীগুলো চলমান তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিসমূহকে সুরক্ষায় এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩-তে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে কো¤পানির প্রভাবমুক্ত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এফসিটিসির অনুস্বাক্ষরকারী রাস্ট্র হিসাবে আর্টিকেল ৫.৩ প্রতিপালণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দায়িত্ব রয়েছে। গত ০৭ এপ্রিল সকাল ১১.০০টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও প্রক্টেট জার্নালিস্ট এর আয়োজনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত কনফারেন্স রুম রায়েরবাজার এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রটেক্ট জার্নালিস্ট এর নির্বাহী পরিচালক নিখিল ভদ্রের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মহবুবুল আলম, ডিআরইউ সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হায়দার, ডাব্লিউবিবির পরিচালক গাউস পিয়ারী এবং সহযোগী অধ্যাপক ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চ এন্ড হসপিটাল ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অন্যন্যা রহমানের উপস্থাপনায় সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ফাহমিদা ইসলাম।
গাউস পিয়ারী বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে। তামাক কোম্পানীগুলো বিভিন্ন কৌশলে আইন বাস্তবায়নের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে চাইবে। পরিবেশ, অর্থনীতি, জনস্বার্থ রক্ষায় তামাক কোম্পানীগুলোর প্রভাব নিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প নেই।
সৈয়দ মহবুবুল আলম বলেন, অতীতে দেখা গেছে তামাক কোম্পানীগুলো মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রণীত নীতিসমুহ প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকে। বর্তমানে সিগারেটের গায়ে সচিত্র সর্তকবানীর ক্ষেত্রে কোম্পানীগুলো অপকৌশলের মাধ্যমে আইন সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। আইন অনুসারে জর্দ্দা, গুলা, বিড়িসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র সর্তকবানী এখনো পদান করা হয়নি। সরকারকে আইনের এ বিধান বাস্তবায়নে আরো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নিখিল ভদ্র বলেন, আটিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনস্বার্থের সংঘর্ষ এড়াতে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তামাক কোম্পানিকর্তৃক প্রদানকৃত তামাক উৎপাদন, বিক্রয়, অনুদান, তদবির ইত্যাদির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে হবে।
রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, তামাকজাত পন্যর প্রসারে তামাক কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে বিভিন্ন প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা যৌথভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি আটিকেল ৫.৩-র লঙ্ঘন। এছাড়া বিদ্যমান আইন অনুসারে সামাজিক দায়বদ্ধতাকর্মসূচীর ক্ষেত্রে নাম, সাইন, ট্রেডমার্ক, প্রতিক এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ।
ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন নীতিসমুহ তামাক কোম্পানীর প্রভাবমুক্ত রাখতে তামাক কোম্পানী ও তাদের প্রতিনিধিদের সাথে প্রজাতন্ত্রের সকল প্রকার শ্রেনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আলোচনার সচ্ছতার প্রয়োজনে রয়েছে। যা এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সম্ভব।