বাংলাদেশ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ হওয়া সত্ত্বেও বিড়ি-সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদানে পিছিয়ে রয়েছে। যা আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। মূলত বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো দেশের তরুণ সমাজকে নেশায় ধাবিত করতে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের বিষয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রচলনে তামাক কোম্পানির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে আহবান জানিয়ে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল সাড়ে ১১টায় সংস্থার সভা কক্ষে উপরোক্ত আহবান জানানো হয়। “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবানীর মুদ্রণ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীতা” সভা হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তি এবং সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক ইবনুল সাইদ রানা, একলাব’র নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম, সার্প’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন, স্বদেশ মৃত্তিকা’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আকবর হোসেন প্রমুখ।
হেলাল আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বর্তমান সরকারেরও রাজনৈতিক অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী মানুষকে তামাকজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে কঠোর হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দায়িত্ব নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা প্রনয়ন করেছেন। সরকারের চলমান তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে প্রতিহত করতে তামাক কোম্পানিগুলোর ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
ইবনুল সাইদ রানা বলেন, বাংলাদেশের চাইতে ৩ বছর পরে এফসিটিসি র্যাটিফাই এবং ৬ বছর পর ২০১১ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করলেও তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে পাশ্ববর্তী দেশ নেপাল। বর্তমানে সব তামাকের মোড়কে ৯০ভাগ স্থান জুড়ে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করছে নেপাল। অথচ বাংলাদেশ আইন প্রণয়নের ১১ বছর পর যখন আইন অনুযায়ী ১৯ মার্চ থেকে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করতে যাচ্ছে, তখন ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো প্রতারনার আশ্রয় নিচ্ছে। মৃত্যুর ফেরিওয়ালা হিসাবে পরিচিত ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলোর প্রতারনা প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
তারিকুল ইসলাম বলেন, সংশোধিত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী আগামী ১৯ মার্চ থেকে সচিত্র স্বাস্থ্য সর্তকবাণী সম্বলিত প্যাকেট বাস্তবায়নে তামাক বিরোধী সকল কর্মীকে আরো জোরালো রাখা হবে। তিনি আরো বলেন আমরা নিজ থেকে যদি প্রথমে সচেতন হই তবে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন এবং কার্যকারী করা সম্ভব হবে।
আবুল হোসেন বলেন, তামাক ও তামাক কোম্পানির কার্যক্রম প্রতিহত করতে আইন করেছে সরকার। এ আইন জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য, ধূর্ত তামাক কোম্পানির প্রতারনার সুযোগ দেয়ার জন্য নয়। তাই তামাক কোম্পানির প্রতারনা কার্যক্রমকে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।
মোঃ আকবর হোসেন বলেন, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী বাস্তবায়নে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সাথে যারা জরিত তাদের সকলকে তামাক বিরোধী প্রচারনায় আরো বলিয়ান হতে হবে। তবেই আমাদের আন্দোলন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সফল হবে।