English | Bangla
নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানীর প্রভাব প্রতিহত করতে হবে

তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তামাক কোম্পানীর প্রভাব প্রতিহত করতে এফসিটিসি এর আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে গাইড লাইন প্রণয়নের দাবী করেছে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো। ২৬ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ১০.৩০ মিনিটে আনসারী ভবনের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের সম্মেলন কক্ষে, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত Discussion on FCTC Article 5.3 and violations of law by the tobacco industries শীর্ষক  আলোচনা সভায় বক্তরা এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে এ কথা বলেন।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়কারী মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এর সভাপত্বিতে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখনে দি ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এর সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, নাটাবের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ, কে এম খলিলউল্লাহ, স্কোপের নির্বাহী পরিচালক এনায়েত হোসেন প্রমূখ । সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল ইসলাম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক, সাইফুদ্দিন আহমেদ। সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এর উপসচিব মো: আমিন-উল-আহসান।

মূল প্রবন্ধে মো: আমিন-উল-আহসান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করার নানা অপকৌশল প্রতিহত করতে এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ অত্যন্ত শক্তিশালী একটি হাতিয়ার। এ হাতিয়ারকে কাজে লাগিয়ে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বেগবানকরণে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী।

মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করতে এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে দক্ষতা ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া কোম্পানীর প্রভাব মুক্ত রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সচেষ্ট থাকবে ।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বিশ্বব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) । বাংলাদেশ প্রথম এ চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখলেও তামাক কো¤পানিগুলোর প্রতারণামূলক নানা কার্যক্রমের ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। এজন্য তামাক কো¤পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ চুক্তির উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী সব ধরনের তামাকের ব্যবহার সীমিত করার লক্ষ্যে কিছু সার্বজনীন মাত্রা নির্ধারন করে তা প্রনয়ণের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাক গ্রহনের কারনে উদ্ভুত মারাতœক স্বাস্থ্যগত, সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এর আর্টিক্যালসমুহ বাস্তবায়নের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।

হেলাল আহমেদ বলেন, কনভেনশনের আর্টিকেল ৫.৩ তে উল্লেখ আছে “তামাক নিয়ন্ত্রণ স¤পর্কিত জনস্বাস্থ্য নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে রাস্ট্রকে জাতীয় আইন অনুযায়ী তামাক কো¤পানির বাণিজ্যিক এবং অন্য কায়েমী স্বার্থ থেকে এই নীতিমালা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে। তামাকজাত দ্রব্য এবং তামাক কো¤পানিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনেই রাষ্ট্রসমূহের তামাক কো¤পানির সঙ্গে কার্যক্রম অবশ্যই প্রকাশ্য ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হতে হবে।

সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এফসিটিসি স্বাক্ষরের পরবর্তীতে আইন প্রণয়ন, সংশোধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে অনেক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে । দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে আরো কৌশলী ও প্রয়োজন অনুসারে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্যের সকল নীতিতে তামাক কো¤পানির প্রভাবমুক্ত রাখা সরকার ও প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।

এছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় হৃদরোগজনিত বাতজ্বর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, দি ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ইউনিভর্সিটি অব হেলথ সাইন্স, একলাব, প্লাটফরম অব ড্রিম ফর বেটার বাংলাদেশ, সপ্নের সিড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, নাটাব, স্কোপ, টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), প্রফেসর (ড.) ওবায়দুল্লাহ ফেরদৌসি ফাউন্ডেশন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস(সিটিএফকে), প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, মানবিক, প্রজ্ঞা, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, গ্রামীন উন্নয়ন সংস্থা (গাস), আধুনিক ইত্যাদি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।