স্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সমতা আনয়নে যাতায়াত ব্যবস্থায় হাঁটা ও বাইসাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হেঁটে ও বাইসাইকেলে চলাচলে কম জায়গা লাগে, জ্বালানীর প্রয়োজন পড়ে না, যাতায়াত খরচ লাগে না, ব্যাযাম হয় এবং যাতায়াত অবকাঠামো নির্মাণে সাশ্রয় হয়। এজন্য সাসটেইনএবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) এর সূচক নির্ধারণে হাঁটা ও বাইসাইকেলকে অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বাংলাদেশ আরবান ফোরামের সভাকক্ষে বাংলাদেশ আরবান ফোরাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “এসডিজিতে মতামত প্রদানের সুুযোগ এবং টারগেট ১১.২-এ হাঁটা ও বাসাইকেলকে অন্তর্ভূক্তকরণ” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
মোস্তফা কাইয়ুম খান, উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আরবান ফোরাম সভা সঞ্চালনা করেন এবং তিনি সুচনা বক্তব্যে বলেন, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) ২০০০-২০১৫ এর মেয়াদ শেষে ১৭ টি গোল নিয়ে সাসটেইনএবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) ২০০১৫-২০৩০ প্রণীত হয়েছে। এ মাসে জাতিসংঘের অন্তর্ভূক্ত দেশগুলির সরকার প্রধানদের উপস্থিতিতে অনুমোদন হবে। তিনি সফলভাবে এসডিজি বাস্তবায়নে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মারুফ হোসেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এলসি, এনসিডি, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, এসডিজি’র আলোকে আগামীতের বিভিন্ন দেশে কতটুকু অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা নিরূপনের সূচক নির্ধারণ করা হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান কমিশন কর্তৃক গঠিত “আন্তঃসংস্থা বিশেষজ্ঞ দল” সূচক চূড়ান্তকরণের কাজ করছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে মতামত নেয়া হবে। নি¤েœল্লিখিত লিংকে মতামত প্রদান করা যাবে-যঃঃঢ়://ঁহংঃধঃং.ঁহ.ড়ৎম/ংফমং/রধবম-ংফমফ/ড়ঢ়বহ-পড়হংঁষঃধঃরড়হ-ংঃধশবযড়ষফবৎং.যঃসষ এবং যঃঃঢ়://ঁহংঃধঃং.ঁহ.ড়ৎম/ংফমং/রধবম-ংফমফ/ড়ঢ়বহ-পড়হংঁষঃধঃরড়হ-রধবম-ংফমং.যঃসষ.
আবু নাসের খান, চেয়ারম্যান, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) বলেন, নগর জীবনে হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াতের সুবিধা মানুষের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম পেতে সাহায্য করবে এবং ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করবে। এই মূহুর্তে এসডিজি’র গোল বা টারগেটগুলোতে পরিবর্তন না করা গেলেও গোলগুলো সঠিকভাবে অর্জিত হচ্ছে কিনা তা নিরূপনের জন্য সূচক নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখনও সেখানে মতামত প্রদানের সুযোগ রয়েছে। তিনি সূচক নির্ধারণে হাঁটা ও বাইসাইকেল বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার আহ্বান জানান।
মো. আকতারুজ্জামান, ইউএন হ্যাবিটেট-বাংলাদেশ, বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে হাঁটা এবং বাইসাইকেলকে প্রাধান্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রফেসর গোলাম রহমান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স, বলেন, সমাজে সমতা আনয়ন এসডিজি’র অন্যতম উদ্দেশ্য। সমাজে’র প্রতিটি ব্যক্তিকে গাড়ি ব্যবহার করেন না, কিন্তৃ প্রতিটি মানুষ হাঁটেন। হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে সামাজিক সমতা আনয়ন সম্ভব। মো আতিকুর রহমান, প্রকল্প কর্মকর্তা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, বলেন, এসডিজিতে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি জানতে সূচক নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
মিহির বিশ্বাস, যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বলেন, যান্ত্রিক যানবাহনের আধিক্য দূষণের অন্যতম কারণ। হাঁটা ও বাইসাইকেলকে প্রাধান্য দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে দূষণ হ্রাস করা সম্ভব। ড. নুরুল ইলাম নাজেম, পরিচালক, নগর গবেষণা কেন্দ্র, বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে। সরকারের প্রতি আহবান জানাই, সাধারণ মানুষকে পরিকল্পনায় প্রাধান্য দেন এবং হাঁটা ও সাইকেলকে এসডিজি’তে অন্তর্ভূক্তির জন্যও পদক্ষেপ নেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ফাতিমা জাহান সীমা, ইমপ্যাক্ট এন্ড ইভালুয়েশন কো-অর্ডিনেটর, কেয়ার বাংলাদেশ; লিমিয়া দেওয়ান, ব্র্যাক; শর্মিনা জাহান, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল এ্যাডভান্সমেন্ট; মো: নজরুল ইসলাম সরকার, নির্বাহী পরিচালক, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা হোমনা; আতিক মোরশেদ, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), মো আলী হাজারী, সিইও, ইউনাইটেড পিপলস ট্রাস্ট; ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবীর; সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান লিটু এবং সহকারী এডভোকেসি কর্মকর্তা নাঈমা আকতারসহ আরো অনেকে।