English | Bangla
লালবাগ কেল্লার মহিমা রক্ষায় কার পার্কিং নির্মাণ কাজ বন্ধ কর ও পূর্বের আদলে ফিরিয়ে নাও
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন মুঘল স্থাপত্য লালবাগ কেল্ল¬া অবৈধ দখলের খপ্পরে পড়েছে। কেল্লার দেয়াল ভেঙ্গে ভিতরে কার পার্কিয়ের জায়গা করা হচ্ছে। যা প্রতœ আইনের পরিপন্থী। দেশের প্রতœসম্পদ সংরক্ষণে সরকারের আর্থিক দৈন্যতার অজুহাত থাকলেও লালবাগের মতো স্থাপত্য ধ্বংসে খুব সহজেই টাকার বরাদ্দ মিলেছে। আমাদের ঐতিহ্যের ধারক লালবাগ কেল্লার প্রাচীর পুণনির্মাণ ও কেল্লার ভিতরের নির্মাণ কাজ অনতিবিলম্বে বন্ধ করে আগের আদলে ফিরিয়ে আনতে হবে। ২৭ জুন ২০১৫, সকাল ১১টায় লালবাগ কেল্লার সামনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টসহ ১২ টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে উক্ত দাবী জানানো হয়। 
 
বক্তারা বলেন, ৩০০ বছরের পুরনো মুঘল কীর্তি লালবাগ কেল্লার মহিমা বিনষ্ট করে প্রাচীর ভেঙ্গে কেল্লার ভিতরে পার্কিং অবকাঠামো নির্মাণ করা জাতির জন্য লজ্জাজনক। খোদ প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর পুরাকীর্তি বিনষ্টের এই দায়িত্ব নিয়েছে। বিদেশী পর্যটকদের গাড়ি পার্কিংয়ের কথা বলে কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ গোষ্ঠীর ব্যবসায়ী স্বার্থ রক্ষা করছে। অথচ বিদেশী পর্যটকেরা বরং অধিক ঐতিহ্য সচেতন। তারা দূর পথও পায়ে হেঁটে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রস্তুত থাকে। সারা দুনিয়াতে যেখানে প্রতœতত্ত্ব সম্পদ সংরক্ষনে মূল নকশাকেই  সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে লালবাগের কেল্লার ভিতরে অবকাঠামো নির্মাণ করে মূল নকশার পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। যা ১৯৬৮ পুরাকীর্তি আইনের পরিপন্থি। পার্কিং এর মাধ্যমে গাড়ির শব্দ ও ধূয়ার দূষণে এই প্রতœনিদর্শনের বরং ক্ষতিই বয়ে আনবে। এবং এই কার পার্কিং সুবিধা তৈরি করে দেয়ার মাধ্যমে এলাকায় বরং যানজটের সৃষ্টি হবে। 
 
লালবাগ কেল্লার চারিপার্শ্বের সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। কর্তপক্ষ মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার বাস্তবায়ন না করে বরং স্বার্থান্বেষী মহলের ইতিহাস ঐতিহ্যকে মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্রে সহায়ক ভ’মিকা পালন করছে। দেশের ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে এই আত্মঘাতী কার্যক্রম বন্ধ করার দাবী জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।  সেই সাথে লালবাগ কেল্লার মহিমা রক্ষায় কেল্লার প্রাচীর আগের আদলে পুণনির্মাণ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যারা পরিকল্পিতভাবে লালবাগ কেল্লা বিনিষ্টের সাথে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। দাবী মানা না হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।
 
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, যুগ্ম-সম্পাদক আলমগীর কবির, বিআইপির যুগ্ম-সম্পাদক মো: আরিফুল ইসলাম, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হোসেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ হোসেন, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আমিনুল ইসলাম সুজন, স্থপতি সাজ্জাদুর রশিদ, পবার সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম, মোঃ সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী আলেয়া পারভীন রনজু, পীসের মহাসচিব ইফমা হুসাইন, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো: মুসা, ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম স্টুডেন্টস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মো: আশিকুর রহমান অভি, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি বুরহান উদ্দিন আহমেদ প্রমূখ।