খাদ্যাভাস, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, মাদক সেবন এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারনে অসংক্রামক রোগ ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এ সকল রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের দিকে অধিক হারে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধে সমন্বিত নীতি, পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ এর বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করতে সরকারীভাবে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠণ করা জরুরি । ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, সোমবার, সকাল ১১:০০ টায়, জাতীয় সংসদের আইপিডি সম্মেলন কে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট এর যৌথ উদ্যোগে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ মতপোষণ করেন।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী’র সভাপত্বিতে সভায় বক্তব্য রাখেন ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া, হুইপ শাহাব উদ্দিন, সংসদ সদস্য ইফরাফিল আলম, সংসদ সদস্য ডা. মুহাম্মদ রুস্তম আলী ফরাজী, সংসদ সদস্য কাজী রোজী, সংসদ সদস্য উম্মে রাজিয়া কাজল, নাটাবের সিনিয়র সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু । স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রোক্টেট জার্নালিস্ট এর নির্বাহী পরিচালক নিখিল ভদ্র। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম ।
গাউস পিয়ারী বলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকার যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে ৯৮.৭% লোকের মধ্যে অন্তত একটি অসংক্রামক রোগের (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিস) ঝুঁকি রয়েছে, ৭৭.৪% এর মধ্যে অন্তত দুটি ঝুঁকি এবং ২৮.৩% এর মধ্যে অন্তত তিনটি ঝুঁকি রয়েছে । শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা দিয়ে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই রোগ প্রতিরোধকে প্রাধান্য দিতে হবে। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, প্রকৃত পে শতকরা ৮০% অপরিণত হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডায়াবেটিস এবং ৪০ ভাগ ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রাধান্য পাচ্ছে না। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান সরকার জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যেকোন পদক্ষেপ নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
হুইপ শাহাব উদ্দিন বলেন, দনি এশিয়ায় মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ অসংক্রামক রোগ। এসকল অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিরপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য সেবন। সরকার তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার ও অসংক্রামক রোগ বিস্তার রোধে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করছে। জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন দেশের মূল উন্নয়নের ভূমিকা রাখবে।
ইফরাফিল আলম বলেন, বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চিকিৎসা কেন্দ্রিক হওয়ায়, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রাধান্য পাচ্ছে না। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করতে সরকারীভাবে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠণ করা জরুরি।
ডা. মুহাম্মদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, অসংক্রামক রোগের বিস্তার দেশের মূল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বে প্রায় ২৩ টি দেশে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন রয়েছে। দক্ষিন দেশ নেপাল, থাইল্যান্ড এ ধরনের ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন প্রয়োজন।
কাজী রোজী বলেন, সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বর্জনের জন্য আমাদের আচরণে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তামাক কারখানায় কর্মরত নারী ও শিশুরা বিশেষ স্বাস্থ্য ঝুকিতে থাকে। তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
উম্মে রাজিয়া কাজল বলেন, জীবনযাত্রার পরির্বতনের পাশাপাশি বর্তমান যুবদের অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সচেতন করতে পারলে আগামীতে দিনের প্রবীনদের মাঝে এ রোগ কমে আসবে।
মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার। শুধুমাত্র মুনাফার দিকে লক্ষ্য রাখলে হবে না। জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কোম্পানীগুলোকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, মানবিক, নাটাব. এইড, বিসিএইচআরডি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসিটি, টিসিআরসি, ডিআইইউ, বাপা, এসইইপি, জালালাবাদ ফাউন্ডেশন, এ্যাশ বাংলাদেশ, শার্প-গাজীপুর, উদ্যোগ, গাস-হোমনা, অরুনোদয়ের তরুণ দল, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, ব্রিসডো-দিনাজপুর, বিকাশ-দিনাজপুর