একটি ছবি হাজার শব্দের চেয়েও অধিক শক্তিশালী। তাই তামাকের মত ক্ষতিকর নেশার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করাসহ তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদান খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
৭ জুলাই দুপুরে ঢাকা জেলা প্রসাশন এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের উদ্যোগে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবানী বিধান বাস্তবায়নে করনীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া আরও বলেন, তরুন প্রজন্মকে ধূমপানের ক্ষতি বিষয়ে সচেতন করতে হবে। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে আসা বিদেশী সিগারেটের মোড়কেও ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করা জরুরী। পাশপাশি পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে সরকারের সাথে সবাইকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল হোটেল, ফাইভ স্টার হোটেল কতৃপক্ষকে আইনে স্বাস্থ্য সতর্কবানীর বিষয়ে চিঠি প্রেরণ করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন বলেন, আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে বাংলাদেশের সব তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্যসতর্ক বাণী আসবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধান বাস্তবায়নে প্রতিমাসে একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া দরকার।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ২০১৩ সালে সংশোধিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এবং ২০১৫ সালে পাস হওয়া তামাক নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার আলোকে আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশের সকল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তামাকের মত ক্ষতিকর নেশাজাত দ্রব্যের ব্যবহার সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বিড়ি-সিগারেট, জর্দা, গুলসহ সবরকম তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান জরুরী এবং বিধান বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
উন্মুক্ত আলোচনায় প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ ছবিসহ স্বাস্থ্যসতর্কবানী প্রদানের পর প্রথম ৬ মাস ডিসি অফিসের পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং টিম নিয়োগের অনুরোধ জানান। মানবিক’র উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, ছবিসহ স্বাস্থ্যসতর্ক বানী প্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত ব্যান্ডরোল থাকা বাধ্যতামুলক ও কোম্পানীগুলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও ছবিসহ স্বাস্থ্যসতর্ক বানীর বিষয়ে চিঠি প্রদান করা দরকার, যেন তারা পরবর্তী সময়ে অস্বীকার করতে না পারে।
নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, বিদেশী সিগারেটের মোড়কে যেন দ্রুত বাংলায় সতর্কবাণী প্রদানে বাধ্য করা হয়। ষ্টেডিয়ামগুলোতে সিগারেটের সহজলভ্যতা ও ধূমপানের কারণে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর মূখপত্র সমস্বর এর নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন এর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা এর সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাকসুদা খন্দকার ও সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন, আনসার ও ভিডিপি’র জেলা কমান্ড্যান্ট প্রতিনিধি মো. বদিউল আলম বীণা সংস্থার প্রেসিডেন্ট আবদুর রশীদ চৌধুরী, আল-ইমরান ফাউন্ডেশন এর প্রধান সমন্বয়কারী ইমরান আজমীর, ইসি বাংলাদেশ-এর এডভোকেসি অফিসার মাহবুব আলম, আহছানিয়া মিশন এর প্রকল্প কর্মকর্তা অদূত রহমান ইমন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এর সহকারী গবেষক মোঃ মহিউদ্দিন, তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মো. রাজেদুজ্জামান, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এর প্রধান সমন্বয়কারী শেলীনা পারভীন, শার্প এর চেয়ারম্যান আবু মো. আবুল হাছিম প্রমূখ।