English | Bangla
শব্দদূষণ বিধিমালা বাস্তবায়নে রোডম্যাপ জরুরী

 

রাস্তায় চলাচলে গাড়ি হর্ণের মাধ্যমে সৃষ্ঠ শব্দদুষণের কারণে কানে কম শোনাসহ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে যা আমাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আচরণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলাসহ বিভিন্ন জটিল সমস্যা তৈরি করবে। এছাড়া ক্রমাগত শব্দদূষণের কারণে মানুষের শ্রবণ শক্তি ক্রমাগতভাবে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। সরকার শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ বিধিমালা তৈরি করলেও এর বাস্তবায়নে কোন অগ্রগতি নেই। বিধিমালা অনুয়ায়ি নীরব এলাকা যেমন হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও সরকার কতৃক ঘোষিত এলাকার সামনে দিনে ৫০ ডেসিবল মাত্রা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে সেখানে ১০০ ডেসিবলের উপরে শব্দের মাত্রা রয়েছে। যা আমাদের শ্রবনশক্তিকে ক্রমানয়ে অকেজো করে দিচ্ছে। আজ সকাল ১১টায় আর্ন্তজাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা ) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ”জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে শব্দদুষণ বিধিমালা বাস্তবায়ন চাই” শীর্ষক অবস্থান কর্মসুচিতে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা নাজনীন কবীর, সমাজসেবক মনজুর হাসান দিলু, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম, ইউনাইটেট পিপলস ট্রাস্ট এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হাজারী প্রমুখ।
নাজনীন কবীর বলেন, নানা রকম পরিবেশ দূষণের মধ্যে শব্দদূষণ অন্যতম। এটি একটি নিরব ঘাতক। শব্দদূষণের কারণে মাথা ব্যাথা, মাথা ধরা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়া, বিরক্তিবোধ করা, ঘুমের অসুবিধা হওয়া, মনসংযোগ নষ্ট হওয়ার মত সমস্যাগুলি তৈরি হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ, পথচারী, চালকসহ যারা বেশি সময় রাস্তায় অবস্থান করেন তারা সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণের সমূখিন হয়। ভারতের পুনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ৮০% ট্রাফিক পুলিশ কানে কম শোনেন রাস্তায় হর্ণের শব্দের কারণে। তিনি আরো বলে, ডাব্লিবিবি ট্রাস্ট ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর শব্দের মাত্রা পরিমাপ করেন। সেখানে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছ্।ে যেমন শাহবাগ নীরব এলাকা হলেও এখানে সর্বোচ্চ ১১০ ডেসিবল এবং সর্বনি¤œ ৮০ ডেসিবল ধব্দের মাত্রা রয়েছে। যা আমাদের জন্য অত্যান্ত বিপদজনক। এ থেকে পরিত্রানেরর জন্য বিধিমালাটি বাস্তাবায়নে সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
সভাপতিত্বের বক্তব্যে আবু নাসের খান বলেন, শব্দদূষণের ভয়াবহতা থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষায় শব্দের অতিমাত্রা কমানো দরকার। শব্দদূষণ বিধিমালা ২০০৬ বাস্তবায়নে সরকারের অতিদ্রুততার সাথে একটি রোডম্যাপ তৈরি জরুরী। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন গাড়ির হর্ন বন্ধে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। তেমনিভাবে সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, গৃহায়ণ মন্ত্রনালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া। গাড়ির হর্ণের মাধ্যমে তৈরি শব্দ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে মোবাইল কোটের মাধ্যমে জরিমানা ও শাস্তির দিতে হবে। প্রয়োজনে ট্রাফিক পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার ক্ষমতা প্রদান এবং জনগণকে শব্দদূষণ সৃষ্টিকারী গাড়ীর বিরুদ্ধে সার্জেট বা ট্রাফিক পুলিশের নিকট অভিযোগ করার বিয়টি সহজ করতে হবে।

অবস্থান কর্মসুচি থেকে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নে প্রত্যেকটি সড়কে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা ও বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; গাড়ী চালকদের প্রশিক্ষণ মডিউলে শব্দদূষণ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা; প্রাইভেটকারসহ সকল যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার নিষিদ্ধ ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ ধারা বাস্তবায়ন; হাইড্রোলিক ও উচ্চশব্দের হর্ণ ব্যবহারকারী গাড়িকে জরিমানাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়।