ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের সেবায় স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে ক্যান্সারে আক্রান্তদের সঙ্গে সময় কাটানো ও বিনোদনের মাধ্যমে তাদের সব সময় আনন্দের মাঝে রাখা প্রয়োজন। তাহলে তাদের জন্য এটি হবে প্রশমন সেবা। আমরা গণমাধ্যমগুলোতে ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতামূলক তথ্য প্রদান করতে পারি এবং পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যেও ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক তথ্য প্রদান করে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব। বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে আশিক ফাউন্ডেশনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এ কথা বলেন্।
ক্যান্সারের বহুবিধ কারণ সম্পর্কে সচেতন করতে ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে সকাল ৯টা ৩০মিনিটে ধানমন্ডি লেকে রবিন্দ্র সররোবর চত্ত্বরে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, অরুণোদয়ের তরুণ দল, মাস্তুল ফাউন্ডেশন এর অয়োজনে একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ক্যাম্পেইন শেষে ১০টা ৩০ মিনিটে সকলে এক সঙ্গে শিশু ক্যান্সার প্রতিরোধে আশিক ফাউন্ডেশন-এ ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আশিক ফাউন্ডেশন’র সভাপতি আফজাল হোসেন, হেলথব্রিজ’র আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন এবং অভিনেত্রী ও পরিচালক মেহের আফরোজ শাওন, মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা। তারা ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের মাঝে বিনোদনের জন্য খেলনা প্রদান করেন। তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সাথে কিছুটা সময় কাটান। ১১টা ৩০মিনিটে আশিক (শিশু ক্যান্সার ফাউন্ডেশন)’র হল রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
আশিক ফাউন্ডেশন’র সভাপতি জনাব আফজাল হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ থেকে ১.৫ লক্ষ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের সকলের জন্য প্রশমন সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের পরিবেশ যেভাবে দূষিত হচ্ছে, খাদ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে, টেলিভিশন এ বিভিন্ন্ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে শিশুদের আকৃষ্ট করে তাদের ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছে। আমরা সকলে এক সঙ্গে এগিয়ে আসলে এ সকল দূষণ, খাদ্যের ভেজাল এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ক্যান্সার এর মতো মরণ ব্যাধিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
দেবরা ইফরমসন বলেন, শিশু-কিশোরদের ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে রাখতে হলে এসব খাবারের দাম বাড়াতে হবে ও সব ধরণের ক্ষতিকর খাদ্যদ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি যেসব খাবারে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে, সেসব খাবারের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণীর প্রচলন করতে হবে। শিশু-কিশোর-তরুণদের ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংক্স ইত্যাদি ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে।
এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, খেলাধুলা, শারীরিক ব্যায়ামের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে খেলার মাঠ, পার্ক, উন্মুক্ত স্থান গড়ে তোলা দরকার। পাশাপাশি বিদ্যমান মাঠ, পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালগুলোকে ক্ষতিকর খাদ্যদ্রব্যমুক্ত ঘোষণা করতে হবে। তবেই আমরা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হব।