পর্যাপ্ত মানসম্মত পাবলিক টয়লেট নিশ্চিত কর
দাবী বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশনের আশ্বাস
জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, অফিস আদালত ও জনসমাগম স্থানে বিনামূল্যে পাবলিক টয়লেট নিশ্চিত করার দাবীতে আজ ১৯ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১১টায় ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবনের সামনে বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টসহ ১১টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরশনের প্রধান নির্বাহীর সাথে স্বাক্ষাৎকালে সিটি কর্পোরেশনকে উক্ত বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের দাবি জানানো হয়। প্রধান নির্বাহী মোঃ আনছার আলী খান প্রতিনিধিদের মানসম্মত পাবলিক টয়লেট নিশ্চিত করতে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের অঙ্গীকার করেন।
বক্তারা বলেন, পাবলিক টয়লেট নিশ্চিতে নতুন স্থাপনা অপেক্ষা সিটি কর্পোরেশনগুলোকে ভিন্ন চিন্তা ও পরিকল্পনা করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন মাকের্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেষ্টুরেন্টসহ সকল জনসমাগমস্থলের কর্তৃপক্ষকে বিনামূল্যে পাবলিক টয়লেট তৈরির জন্য বাধ্য করার পদক্ষেপ নিতে হবে। মসজিদ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো সারা দিন ব্যবহারে কিভাবে মানসম্মত ব্যবস্থা করা যায় এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারে । বিদ্যমান টয়লেটগুলোতে বিজ্ঞাপন ব্যবহারের অনুমতি মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষনের খরচ তুলে আনতে পারে। ফলে সকল মানুষ বিনামূল্যে এ ধরনের টয়লেট ব্যবহারের উৎসাহী হবে।
বক্তারা বলেন, পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে অর্থ প্রদান ব্যবস্থা সমতা, জনস্বাস্থ্যের পরিপন্থী। পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে অর্থ প্রদান অনেক মানুষকেই টয়লেট ব্যবহারে নিরুৎসাহি করে। জনগন কর প্রদানের পরও যদি, পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে অর্থ প্রদান করতে হয় তবে স্থানীয় সরকারে সেবার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। পাবলিক টয়লেট সিটি কর্পোরেশনের আয় নয় ববং সেবা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বিষয় হিসেবে ভাবতে হবে। বিদ্যমান ইজারা দেয়ার পরও অধিকাংশ পাবলিক টয়লেট অপরিচ্ছন্ন এবং মানুষ যত্রতত্র মলমুত্র ত্যাগ করে, যা ইজারা ব্যবস্থার অকার্যকারিতা প্রমান করে। মসজিদ ও অনেকে মাকের্টে বিনামুল্যে মানুষকে পাবলিক টয়লেট সুবিধা প্রদান করছে। অথচ হাজার কোটি টাকা বাজেটের পর সিটি কর্পোরেশনগুলো জনগনকে এখনো বিনামূল্যে পাবলিক টয়লেট সুবিধা দিতে পারছে না।
বক্তারা বলেন, মানুষ বেশি সময় ধরে প্রস্্রাব, পায়খানা আটকে রেখে কিডনিজনিত রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে, নারী, প্রতিবন্ধীদের শৌচাগার ব্যবহারে আলাদা ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। অন্যদিকে নারী ও প্রতিবন্ধীদের আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা না থাকায়্ তাদের সমতা ও মর্যাদার বিষযটি উপেক্ষিত থাকছে।
নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না এর সভাপতিত্বে এরং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ এর এডভোকেসি সেল এর প্রধান যোসেফ হাওলাদা, পিস এর মহাসচিব, ইকমা হোসাইন, দেবিদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদ এর সভাপতি মোঃ মুসা, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক, এডভোকেট নিরুপমা, বিসিএইচআরডি এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুল হক প্রমূখ।
সভায় পাবলিক টয়লেট বিষয়ক সুষ্ঠু নীতিমালা এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে পাবলিক টয়লেট নিশ্চিতে স্থানীয় সরকার এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করা। পাবলিক টয়লেট না থাকলে বা মানসম্মত না হলে, সহজে অভিযোগ প্রদানের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে দোষীদের শাস্তি এবং জরিমানা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।