English | Bangla
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) কর্মীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা
চিরাচায়িত অভিযোগ নয়, বরং  সীমিত লোকবল ও সম্পদ দিয়ে বছরে লক্ষ লক্ষ পরিচয়হীন, ধনী-গরীব মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার দেয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) কর্মীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। ৮ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ সকালে ২৩টি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ঢামেক কর্মীদের ফুলে শুভেচ্ছার মাধ্যমে প্রতীকীভাবে দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব হাসপাতালের কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ধন্যবাদ কর্মসূচীর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য রক্ষায় বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা হয়। 
 
বক্তারা বলেন,  সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় আশ্রয়স্থল সরকার পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতালগুলো। জনগনের এ হাসপাতালগুলোর সেবা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু সেবা প্রদানকারীদের প্রতি নূন্যতম স্বীকৃতি নেই। গরীব, সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় আশ্রয়স্থল এই সকল হাসপাতাল। ধনী, গরীব, পরিচয়হীন নির্বিশেষে সকলকে সেবা দেয়ায় ঢামেককে বলতে চাই “ধন্যবাদ আপনাদের, আমাদের সেবা দেওয়ার জন্য”। 
 
২০১২ সালের তথ্যানুসারে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতালের কর্মীরা ১৩ কোটি ৮২ লক্ষ ৮১ হাজার ১১৫ জনকে বর্হিবিভাগে এবং ৪৫ লক্ষ জনকে হাসপাতালে রেখে সেবা দিয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি ৩২৯৭ জনে ১জন চিকিৎসক, ১১০০০ জনে ১ জন নার্স  এবং ২৭৮৪২ জনে ১ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট রয়েছে। এই সীমিত সম্পদ ও লোকবল দিয়ে মানুষকে সেবা দেয়ায় ঢামেকের মাধ্যমে সারা দেশের সকল রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতালের কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও স্বীকৃতি এক ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ, যা মানুষকে কাজে উৎসাহী এবং উদ্ধুদ্ধ করে।
 
বক্তারা বলেন,  দিন দিন মানুষের মাঝে রোগ বাড়ছে। রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বসান্ত হচ্ছেন অনেকেই। ক্রমবর্ধমান রোগের জন্য জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। রোগ সৃষ্টির একটি বড় কারন হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। এছাড়া বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ, খাদ্যাভ্যাস ও জীবন-যাত্রার পরিবর্তনের ফলে আশংকাজনক হারে রোগ বিস্তার ঘটছে। চিকিৎসা হয়ে উঠছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এমনকি রোগী সুস্থ হলেও রোগী ও তার পরিবারবর্গ, সমাজ ও রাষ্ট্র নানাভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি সরকারকে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 
 
স্বেচ্ছাসেবীরা বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অনেক কর্মী এই ধন্যবাদ ও ফুলের শুভেচ্ছা পেয়ে অনেকেই উৎফুল্ল। অনেকে বলেছেন ২৫- ৩৬ বছরের এটা তাদের প্রথম ধন্যবাদ পাওয়া। ঢামেকের-র পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এমডি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন এ উদ্যোগ কর্মীদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। এই ধন্যবাদ আমাদের জন্য সম্মান ও গৌরবের। আমরা আরো নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালণ করার চেষ্টা করবো। 
 
ঢাকা মেডিকেল কলেজের গেইটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দক্ষ, কর্মঠ, দায়িত্ববান চিকিৎসাকর্মীদের সরকারীভাবে চিহ্নিত ও সম্মানা প্রদান, রোগীর চাপ কমাতে জেলা, উপজেলা, মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধণ। “স্বাস্থ্য”-কে বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অলংঘনীয় মানবাধিকার হিসেবে উল্লেখ, স্বাস্থ্য উন্নয়নের মূল কৌশল হিসেবে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, একটি জনস্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন, বাজেটে রোগ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের জন্য বরাদ্ধ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক যে কোন নীতি ও কার্যক্রম বাতিল, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিতকর খাদ্য বিপননে প্রচারণা বা প্রলুব্ধকরণ বন্ধের সুপারিশ করে। সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এ কে এম আবু মকসুদ, আরো উপস্থিত ছিলেন আমীর হাসান, কাজী এনায়েত হোসনে, ফারজানা জামান লিজা, হেলাল আহমেদ, ইবনুল সাইদ রানা, মাহবুল হক, জিয়াউল হক, সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ।