English | Bangla
'রেল কারখানাসমূহ আধুনিকায়নে করণীয়' শীর্ষক মতবিনিময় সভা

রেলের ক্যারেজ, ওয়াগন এবং লোকোমোটিভ মেরামতের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলা এবং গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারখানাসূহ আধুনিকায়নে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে লোকবল সঙ্কট, আধুনিক মেশিনারীজ না থাকা, যন্ত্রাংশের অপ্রতুলা এবং সর্বোপরি যথেষ্ঠ বাজেট বরাদ্দ না থাকায় রেল কারখানাসমূহের উৎপাদনশীলতা ব্যহত হচ্ছে। ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখ সকাল ১১.০০ টায় রেল ভবনের  যমুনা অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ রেলওয়ে, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যেগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব মোঃ মুজিবুল হক, এমপি। সভায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ তাফাজ্জল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, অতিঃ সচিব কমল কৃষ্ণ ভট্রাচার্য্য, আহসানউল্লাহ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম এম শফিউল্লাহ,  বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি.) এর সভাপতি ড. গোলাম রহমান, নাগরিক অধিকার সংরক্ষন ফোরাম এর সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, বিলস্ কোষাধাক্ষ্য মোঃ কবির হোসেন, এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগ এর সভাপতি মোঃ হুমায়ন কবির। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর করেন ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান এবং সভা সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক (প্রোগ্রাম এন্ড প্ল্যান) এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
সভায় প্রবন্ধে মারুফ রহমান বলেন, বর্তমানে রেল কারখানাগুলোতে লোকবল সংকট, বাজেট ঘাটতি, যন্ত্রাংশের স্বল্পতা, আধুনিক মেশিনের অভাব, অনিরাপদ কাজের পরিবেশের কারণে রেল কারখানাসমূহের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কাজেই মহাপরিকল্পনায় রেল কারখানাসমূহ আধুনিকায়নে যে সকল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার পাশপাশি কারখানার বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।
রেলপথ মন্ত্রী জনাব মোঃ মুজিবুল হক বলেন, এ দেশের মানুষকে রেলের মাধ্যমে সেবা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। যার ফলশ্র“তিতে বর্তমান সরকার রেলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেছে এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। নতুন রেললাইন তৈরির পাশপাশি পুরাতন লাইন সংস্কার করা হচ্ছে। পরিশেষে তিনি রেলকে নিজের সম্পদ মনে করে রেলের অগ্রগতিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, রেলের জন্য মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি রেল কারখানাসমূহ আধুনিকায়নে বাজেট বরাদ্দের পাশাপাশি মহাপরিকল্পনায় কারখানা আধুনিকায়নে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
মাননীয় সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, রেল পরিবেশ বান্ধব একটি পরিবহন। এজন্য রেলের প্রতি আমরা আন্তরিক। তিনি ঢাকা-চট্রগ্রাম এর ডাবল লাইন নির্মাণ বিষয়ে বলেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকা- চট্রগ্রাম এর ডাবল লাইনের প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এত করে রেলের সেবা আরো বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, মোঃ তাফাজ্জল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি গৌরব উজ্জ্বল প্রতিষ্ঠান। এদেশে আগে শুধু রেলের বিরুদ্ধে কথা বলা হতো। রেলের পক্ষের লোক খুবই কম ছিল। বর্তমানে রেলের প্রতি জনসাধারণের সমর্থন বেড়েছে এবং সরকারের সদিচ্ছায় রেলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
 
আহসানউল্লাহ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য এ এস এম শফিউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে যাতায়াত ব্যবস্থায় রেলকে যদি অগ্রাধিকার দেওয়া হতো তবে আজ আমরা যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি তা করতে হতো না। বৃটিশ থেকে আমরা যে রেল পেয়েছি তা দিয়েই চলছি বরং কোথাও কোথাও কমেছে। তবুও আশার কথা হলো রেলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় হয়েছে, আলাদা বাজেট পাচ্ছি। আামাদের রেলের উন্নয়নে সময় উপযোগী  দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।