যাতায়াত ব্যবস্থায় হাঁটা এবং অযান্ত্রিক যানবাহন হিসেবে রিকশা ও সাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নগর যাতায়াতে অধিকাংশ মানুষ এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে। হাঁটা, রিকশা ও সাইকেলে যাতায়াতের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য নির্দিষ্ট কোন দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান/কর্তৃপক্ষ নেই। এজন্য যাতায়াত বিষয়ক পরিকল্পনা ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে হাঁটা, সাইকেল ও রিকশা গুরুত্ব পাচ্ছে না। ফলে এই মাধ্যমগুলিতে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্বাচ্ছন্দে নগরে হাঁটা, রিকশা ও সাইকেল চলাচলের সুবিধার্থে অযান্ত্রিক যান (নন-মোটরাইজড্ ট্রান্সপোর্ট) এনএমটি সেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখ সকাল ১১ টায় গাবতলিতে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও আস্থা এর উদ্যোগে আয়োজিত ক্যাম্পেইন এ বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ক্যাম্পেইনে বক্তারা দাবী করেন, হাঁটার জন্য নগর এলাকায় পর্যাপ্ত ফুটপাত তৈরি, সমতলে রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং, সিগনাল লাইট, পথচারী পারাপার সাইন, পাবলিক টয়লেট, পথচারীর বসার ব্যবস্থা করা এবং সাইকেল ও রিকশার জন্য পৃথক লেন নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে একটি সেল বা বিভাগ প্রয়োজন।
ঢাকা শহরের একটি বড় অংশের মানুষ হেঁটে চলাচল করলেও, নগর পরিকল্পনায় পথচারীরা বরাবরই উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। ঢাকা যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও পথচারীদের জন্য নেই বরাদ্ধ ও পরিকল্পনা। পরিকল্পনা আর বাজেটে পথচারীদের প্রতি উপেক্ষার প্রেক্ষিতে পথচারীরা এই নগরে প্রতিনিয়ত আহত ও নিহত হচ্ছে। গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের যে পরিমাণ দূঘর্টনা হয় তার ৮৬% পথচারী। অর্থাৎ নগরে সড়ক দূঘর্টনায় গড়ে প্রতিদিন একজন পথচারী আহত বা নিহত হয়। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের একটি বিভাগ বা সেল থাকলে এটি হত না।
সিটি কর্পোরেশনের আইন-২০০৯ তৃতীয় তফসিল এর ১৯.১ বলা হয়েছে পথচারী যাহাতে পথ চলিতে বিপদগ্রস্ত না হন এবং তাহার নিরাপদ ও অনায়াসে পথে চলাফেরা করিতে পারে সেই জন্য কর্পোরেশন প্রবিধান দ্বারা যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন আইনের ধারা ৬৬,৬৭,৬৮,৭২, ৭৭, ৮০ এবং বিআরটিএ ধারা ১৪৩, ১৫৭, ১৬৪ (খ) ধারায় যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য চলাচল নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিধান রয়েছে। এয়াড়া যোগযোগ মন্ত্রণালয়ের স্ট্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট-এ পথচারীদের অগ্রাধিকার নীতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পথচারীদের বিষয়টি গুরুত্ব না পাওয়ায় এ বিধানগুলোর বাস্তবায়নে পদক্ষেপ খুবই কম।