নারায়নগঞ্জ-ঢাকা-জয়দেবপুর রেল লাইনটি যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই লাইনে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ট্রেনে করে কর্মস্থলে যাতায়াত করে থাকেন। তবে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে দুইটি মাত্র লাইন থাকায় যাত্রী চাহিদা থাকা স্বত্ত্বেও নতুন ট্রেন চালু করা এবং ঢাকায় প্রবেশকারি পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের শিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য সরকার ২০১২ সালে ঢাকা- জয়দেবপুর রেললাইন চারলেনে উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করলেও টেন্ডার জটিলতার কারণে এষনও কাজ শুরু করা সম্ভব হয় নি। এমতবস্থায় ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য কমিউটার ট্রেন চালু, ঢাকায় প্রবেশকারী পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের শিডিউল ঠিক রাখা এবং যানজট হ্রাসে ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতূর্থ রেল লাইন এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ও ডাবল লাইন স্থাপন জরুরি। ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং বিসিডিপি এর যৌথ উদ্যোগে টংঙ্গী জংশনের সামনে “অবিলম্বে ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ রেললাইন দ্রুত বাস্তবায়ন চাই” শীর্র্ষক মানববন্ধনে বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান, রেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, বিসিডিপি এর নূর মোহাম্মদ, শামছুল হক, মোঃ নাসির উদ্দিন এবং স্থানীয় এলাকাবাসী।
মানববন্ধবে রেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় দিনদিন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী রেলের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়নি। তবে বর্তমানে রেলের উন্নয়নে দৃষ্টি দেওয়ায় আমরা আশান্বিত হয়েছি। রেলের যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিতে ট্রেনের শিডিউল ঠিক রাখার জন্য ঢাকা শহরের যানজট কমাতে ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ রেললাইন প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে অসমভাবে সড়ক পথের সম্প্ররণের খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। এজন্য বৃদ্ধি পেয়েছে দূর্ঘটনা, যাতায়াত খরচ, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ, দূষণ, জ্বালানী অপচয় ইত্যাদি। যা জাতীয় ও পারিবারিক পর্যায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই রেলকে অগ্রাধিকার দিয়ে এর উন্নয়ন করা জরুরি। ঢাকা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রেললাইন চারটিতে রূপান্তর এবং ঢাক-নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইন করা হলে নারায়নগঞ্জ টংগী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সাথে ২৪ ঘন্টা দ্রুত যোগাযোগে কমিউটার ট্রেনের ব্যাবস্থা চালু করা যাবে। যা ওই সকল অঞ্চলের মানুষের ঢাকা শহরে অবস্থিত কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
বিসিডিপি এর শামছুল হক বলেন, ঢাকা- টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন না থাকায় কমলাপুর থেকে প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা পরপর ট্রেন ছাড়তে হয়। এছাড়া পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা প্রায় ট্রেনগুলোকে লাইন ক্লিয়ারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। ঢাকা- টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন স্থাপন হলে ট্রেন চলাচলের সময় কমানো সম্ভব হবে।