English | Bangla
“তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রয়োজন” শীর্ষক মতবিনিময় সভা

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অনেক দুর্বলতা রয়েছে। কার্যকরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য এ দুর্বলতাগুলো দূর করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রয়োজন। ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১১ সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। নাটাব এর যুগ্ম সম্পাদক খায়ের উদ্দিন মুকুল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর সমন্বয়কারী ডাঃ ইকবাল কবীর। আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আমিনুল হক, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি’র প্রতিনিধি হারুনুর রশীদ । সভা সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন।

প্রবন্ধে সাগুফতা সুলতানা বলেন, বিগত সময়ে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, বিধিমালা, তামাক নিয়ন্ত্রন আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল গঠিত হয়েছে। এসব ইতিবাচক পদক্ষেপের প্রতিটি প্রক্রিয়ায় সমর্থন যুগিয়েছে গণমাধ্যম। এছাড়া আইন অনুযায়ী পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত, বিড়ি-সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধর মত গুরুত্বপূর্ণ অর্জন রয়েছে। তবু আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি এফসিটিসি অনুযায়ী এ আইনের দুর্বলতা রয়েছে। যে কারণে তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে আইন লঙ্ঘণ করে চলেছে। তামাক কোম্পানির পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ প্রচারণা বন্ধ করতে আইনকে শক্তিশালী করা দরকার।

ডাঃ ইকবাল কবীর বলেন, উন্নত দেশগুলোতে কঠোর পদক্ষেপ, তামাকের ক্ষতিকর বিষয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের মধ্যে তামাক ব্যবহার কমছে। যে কারণে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে উন্নয়নশীল, ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোকে টার্গেট করেছে। তামাকের এ ব্যাপক ব্যবহার ঠেকাতে আইনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ডে তামাক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আলাদাভাবে ২% কর ‘থাই হেলথ ফান্ড’ এর জন্য সংগ্রহ করা হয়। যে অর্থ দিয়ে তামাক বিরোধী প্রচারণা করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারিভাবে তামাক বিরোধী প্রচারণার জন্য কোন বরাদ্দ নাই। তাই কার্যকরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করতে হবে।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, গত ১২ বছরে তামাক বিরোধী সামাজিক আন্দোলনে গণমাধ্যম সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন উন্নয়ন, তামাকের উপর কর বৃদ্ধি, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে খায়ের উদ্দিন মুকুল বলেন, নাটাবসহ বেসরকারি সংগঠনগুলো তামাক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।

মুক্ত আলোচনায় গনমাধ্যম কর্মীরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন এবং তামাক বিরোধী প্রচারণা বেগবান করতে বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল,শ্যামল কান্তি নাগ, ইয়সামিন পিউ, তাসকিনা ইয়াসমিন, রাজু হামিদ ।