কর্মশালায় ফ্যসিলিটেটর হিসেবে বিষয়ের উপর সেশন পরিচালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম এবং ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার মারুফ রহমান। বক্তব্য রাখেন, র্যাক-এর নির্বাহী পরিচালক এ টি এম শহিদুল ইসলাম, সাফ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মানব কল্যান সংস্থার এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন, প্রশিক্ষিত যুব কল্যান সংস্থা এর পরিচালক কাজী মোহাম্মদ জামিউল ইসলাম ডাবলু এবং সুসমাজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এন এন এম মুজিবুদ্দৌলা সরকার কনক রহমান। কর্মশালায় উপস্থাপক ছিলেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর নেটওয়ার্ক অফিসার অদূত রহমান ইমন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ২৭.৩ ভাগ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের অসুখ ও ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক ব্যাধির কারণে মারা যায়। ২০০৮ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয় অঞ্চলে যারা অসংক্রামক রোগের কারণে মারা যায় তার ৩৪ শতাংশই যুব স¤প্রদায়ের। যে কোন দেশেই যুব স¤প্রদায় উন্নয়নের জন্য মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। সুতরাং অসংক্রামক রোগের মরণ ছোবল যুব সমাজের অকালে ঝরে পরা রোধ করতে জরুরী পদেক্ষেপ প্রয়োজন। তাছাড়া রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধকে প্রাধান্য দিলে রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসা ব্যায় অনেক খানি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বক্তারা বলেন, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং বিজ্ঞাপনের ফলে শিশুকিশোরদের মধ্যে ক্ষতিকর কোমলপানীয়, এনার্জি ড্রিংক্স, জাঙ্কফুড, ফাস্টফুড সেবনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড ও এনার্জি ড্রিংক্স, কোমল পানীয় সেবনের কারণে শিশুসহ সব বয়সীদের টাইপ-২ ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়াসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা বেড়ে চলেছে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড ও কোমল পানীয়ের ব্যবহার হ্রাসে বিজ্ঞাপন বন্ধ এবং এ সকল পণ্যের উপর উচ্চ কর আরোপ জরুরী।
বক্তারা বলেন, শিশুরা গৃহবন্দী হয়েছে টেলিভিশনের উপর আশ্রয় নিচ্ছে। আর টিভিতে প্যাকেট জুস, কোমল পানীয়, ফাস্ট ফুড, এনার্জি ড্রিংক্স এর মত ক্ষতিকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন দেখায়। এতে এসব খাবারের প্রতি শিশুদের আকর্ষণ বাড়ছে। তাই অসংক্রামক রোগের জন্য দায়ী সব ক্ষতিকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন গণমাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, পর্যাপ্ত শারিরীক পরশ্রমের জন্য হাঁটা ও সাইকেলে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। শিশুসহ সব বয়সীদের খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি করতে খেলার মাঠ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ফুটপাতগুলো চওড়া করতে হবে। যাতে মানুষ শহরের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে হেঁটে যেতে পারে। মানুষ হাঁটার সুযোগ পেলে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমে আসবে। মানুষের সুস্থ্য থাকার জন্য প্রতিদিন নূন্যতম ৩০ মিনিট হাঁটা অথবা সাইকেলে যাতায়াত করা প্রয়োজন। কিন্তু শহরগুলোতে এজন্য উপযোগী পরিবেশ নেই। মানুষকে হাঁটতে ও সাইকেল ব্যবহাওে উৎসাহী করতে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে শহরগুলিতে প্রয়োজনীয় পদÿেপ গ্রহণ করতে হবে। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় খুলনা বিভাগের জেলা থেকে ৩০টি বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদান করা হয়।