তামাক কোম্পানিগুলো আইন ভংগ করে নিজেদের বানিজ্যিক স্বার্থ চরিতার্থ এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গৃহিত কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে প্রতিনিয়ত অপচেষ্টার মাধ্যমে কুটকৌশল ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার জোরদার করতে তামাক কোম্পানি কুটকৌশল ও অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে হবে। তামাক কোম্পানিকে প্রতিহত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠনগুলোকে সমন্বিত ভূমিকা পালন করতে হবে। তামাক কোম্পানির অপপ্রচার প্রতিহত করতে গণমাধ্যমকেও সক্রিয় ও সচেতন থাকতে হবে।
আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (নাটাব), প্রত্যাশা, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ঢাকা জেলা টার্স্কফোর্স কমিটি, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত র্যালীতে রক্তারা এই আহবান জানান। ইবনুল সাঈদ রানার সভাপতিত্বে সভায় র্যালির পূর্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ জসিম উদ্দিন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, একলাব এর নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। র্যালিটি সকাল ১০টায় শহীদ মিনার হতে শুরু করে দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট মোড় হয়ে ওসমানী মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। নিরাপদ ডেভলাপমেন ফাউন্ডেশন, জাতীয় অধূমপায়ী ফোরাম, একলাব, এইড, অরুণোদয়ের তরুন দল, মানবিক, মানব উন্নয়ন সংস্থা, দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ, পদক্ষেপ-মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রসহ প্রায় ২০টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন তামাক নিয়ন্ত্রণে বড় হুমকি কোম্পানী। তামাক কোম্পানিগুলো আইন প্রনয়ণ, সংশোধন, বাস্তবায়ন, কর বৃদ্ধি, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে বাধাগ্রস্ত করতে বিভ্রান্তকর প্রচারণা চালায়। সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচী জনগন ও নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতে কোম্পানিগুলো শক্তিশালী হাতিয়ার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বৃক্ষরোপন, কম্পিউটার প্রশিক্ষন, পানি সরবরাহ ইত্যাদি সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসুচী বাস্তবায়নের পর বিপুল টাকা খরচ করে পত্র পত্রিকায় প্রচার করে থাকে। এধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের সহানুভুতি আদায় এবং নীতিনির্ধারকদের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
বক্তারা বলেন, কোম্পানিগুলোর কুটকৌশল ও অপপ্রচারে বিষয়ে আলোচনা কম হয়। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের রোগ ও মৃত্যু সৃষ্টিকারী পণ্যের বাজার সৃষ্টির বৃদ্ধি করছে। আইনে নিষিদ্ধ থাকার পরও কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে নানা কৌশলে তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে তামাক কোম্পানীগুলো যেভাবে আইন ভাঙ্গছে, তার তুলনায় শাস্তি প্রদানের উদাহরণ হাতেগোণা। আইনে অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকার পরেও তামাক কোম্পানীগুলো আইন মানছে না। অনেক ক্ষেত্রে আইনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নানাভাবে তামাকজাত দ্রব্যের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যে বিষয়গুলো আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি এমন ক্ষেত্রে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
বক্তারা তামাক কোম্পানীর কুটকৌশল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ; কোম্পানিগুলো কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে, সে বিষয়ে এফসিটিসি-র আর্র্টিকেল ৫.৩-এর আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সুস্পষ্ট নীতি প্রণয়ন। রাষ্ট্রের আইন ভঙ্গের জন্য কোম্পানীগুলোকে অভিযুক্ত করে যথাযথ শাস্তি প্রদানে ব্যবস্থা রেখে আইন সংশোধনের দাবি জানান।